স্ত্রীর সামনে ট্রেনের নিচে প্রকৌশলীর আত্মহত্যা
+
সৌরভ পাল (৩৩) নামের এক প্রকৌশলী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত সৌরভ চট্টগ্রামের রাউজানের ঊনসত্তর পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তার পিতার নাম গোপাল চন্দ্র পাল। চুয়েট থেকে পাস করে অস্ট্রেলিয়ার একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন তিনি। শহরের নাছিরাবাদ মহিলা কলেজের পাশে তার ভাইয়ের বাসায় থাকতেন সৌরভ।
তার এক বন্ধু জানান, সকাল ১১টার দিকে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেয়ার আগে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে রাস্তায় ঝগড়া করছিলেন। একপর্যায়ে একটি ট্রেন আসতে দেখে তিনি দৌড় দেন। এ সময় তার স্ত্রী আশপাশের লোকজনকে স্বামীকে বাঁচানোর আকুতি করতে থাকেন।
তিনি জানান, মুহূর্তের মধ্যে কর্নেল হাটের কৈবল্যধাম সংলগ্ন ছাইপাড়া রেললাইনের ওপর শুয়ে পড়লে ট্রেনে কাটা পড়েন সৌরভ। এ সময় তার ডান পা ও বাম হাত দেহ থেকে বিছিন্ন হয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় দ্রত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার এসআই অহিদুল হক জানান, রেলের নিচে কাটা পড়ে এক প্রকৌশলী মারা গেছে।
সৌরভের পারিবারিক সূত্র জানায়, সৌরভ চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে ৩ বছর আগে বেশ ভালো বেতনে চাকরি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান। পরে দেশে ফিরে ব্যস্ত হয়ে যান সংসারের কাজে। এক বছর আগে বিয়ে করলেও স্ত্রীর সঙ্গে বণিবনা হচ্ছিল না তার।
অধ্যাপক গোলাম আযম ১৯২২ সালের ৭ নভেম্বর ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে তার মাতুলালয়
শাহ সাহেব বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
নবীনগরের বীরগাঁও গ্রামে।
তিনি ১৯৪৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ ও ১৯৪৮ সালে এমএ পাস করেন। এর আগে ১৯৪৪ সালে ঢাকার তৎকালীন ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে মেধা তালিকায় দশম স্থানসহ ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৫০ থেকে ৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন।
অধ্যাপক গোলাম আযম ১৯৪৭-৪৮ মেয়াদে ডাকসুর জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৪৮-১৯৪৯ মেয়াদে তিনি আবার এ পদে নির্বাচিত হন। তিনি একজন অন্যতম ভাষাসৈনিক। ডাকসু জিএস থাকাকালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সব ছাত্রছাত্রীর পক্ষে তিনি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের কাছে ঐতিহাসিক স্মারকলিপি উপস্থাপন করেন। ভাষা আন্দোলনের কারণে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তাকে গ্রেফতার করা হয়। রংপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনার সময়ও তিনি কারাবরণ করেন। জীবনের শুরুতে তিনি তাবলীগ জামায়াতের সাথে যুক্ত হন। পরে ১৯৫৪ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত একই দলের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জীবনে বহুবার তিনি রাজনৈতিক কারণে কারাবরণ করেছেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ এ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি পাকিস্তান সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং জাতীয় বিভিন্ন সঙ্কট উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পক্ষে প্রচারণা, আইউব খানবিরোধী জোট ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন কমিটির (ডাক) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, পাকিস্তান শাসকবিরোধী জোট পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং ১৯৭৩ সালে লন্ডন যান। ১৯৭৮ সালের ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং আবার জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন । ২০০১ সালে তিনি আমিরের দায়িত্ব থেকে অবসরে যান। ১৯৭৩ সালে অধ্যাপক গোলাম আযমের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয় এবং পরে নাগরিকত্ব বিষয়ে আলোচিত মামলায় ১৯৯৪ সালে হাইকোর্ট তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেন ।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার রূপকার অধ্যাপক গোলাম আযমের পরিচিতি রয়েছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুবাদে বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক নেতার কাছে অধ্যাপক গোলাম আযম একজন ইসলামি রাজনীতিবিদ হিসেবে খুবই পরিচিত একটি নাম।
জেনারেল এরশাদের শাসনামলে আশির দশকের মাঝামাঝি তিনি জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ধারণা প্রচার করেন। এরপর ১৯৯১ সালে এ ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা স্বাধীন বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাইলফলক এবং যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় আরো তিনটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক গোলাম আযম বেশ কিছু আলোচিত গ্রন্থের প্রণেতা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পলাশী থেকে বাংলাদেশ, ইকামতে দ্বীন, মনটাকে কাজ দিন, তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘জীবনে যা দেখলাম’। এ ছাড়া তার বেশ কিছু অনুবাদ গ্রন্থও রয়েছে।
অধ্যাপক গোলাম আযমের ছয় ছেলে। এর মধ্যে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী দেশে আছেন। তার স্ত্রী সৈয়দা আফিফা আযম জীবিত আছেন।
গ্রেফতার ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ : মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলার কার্যক্রম শুরু হলে অধ্যাপক গোলাম আযমকে ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ মোতাবেক তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হলে সে দিনই তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অধ্যাপক গোলাম আযমকে ৯০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ও সরকার পক্ষ পৃথক আপিল করেছিলেন। যার শুনানি আগামী ডিসেম্বরে হওয়ার কথা ছিল।
তিনি ১৯৪৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ ও ১৯৪৮ সালে এমএ পাস করেন। এর আগে ১৯৪৪ সালে ঢাকার তৎকালীন ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে মেধা তালিকায় দশম স্থানসহ ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৫০ থেকে ৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন।
অধ্যাপক গোলাম আযম ১৯৪৭-৪৮ মেয়াদে ডাকসুর জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৪৮-১৯৪৯ মেয়াদে তিনি আবার এ পদে নির্বাচিত হন। তিনি একজন অন্যতম ভাষাসৈনিক। ডাকসু জিএস থাকাকালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সব ছাত্রছাত্রীর পক্ষে তিনি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের কাছে ঐতিহাসিক স্মারকলিপি উপস্থাপন করেন। ভাষা আন্দোলনের কারণে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তাকে গ্রেফতার করা হয়। রংপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনার সময়ও তিনি কারাবরণ করেন। জীবনের শুরুতে তিনি তাবলীগ জামায়াতের সাথে যুক্ত হন। পরে ১৯৫৪ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত একই দলের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জীবনে বহুবার তিনি রাজনৈতিক কারণে কারাবরণ করেছেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ এ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি পাকিস্তান সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং জাতীয় বিভিন্ন সঙ্কট উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পক্ষে প্রচারণা, আইউব খানবিরোধী জোট ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন কমিটির (ডাক) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, পাকিস্তান শাসকবিরোধী জোট পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং ১৯৭৩ সালে লন্ডন যান। ১৯৭৮ সালের ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং আবার জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন । ২০০১ সালে তিনি আমিরের দায়িত্ব থেকে অবসরে যান। ১৯৭৩ সালে অধ্যাপক গোলাম আযমের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয় এবং পরে নাগরিকত্ব বিষয়ে আলোচিত মামলায় ১৯৯৪ সালে হাইকোর্ট তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেন ।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার রূপকার অধ্যাপক গোলাম আযমের পরিচিতি রয়েছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুবাদে বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক নেতার কাছে অধ্যাপক গোলাম আযম একজন ইসলামি রাজনীতিবিদ হিসেবে খুবই পরিচিত একটি নাম।
জেনারেল এরশাদের শাসনামলে আশির দশকের মাঝামাঝি তিনি জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ধারণা প্রচার করেন। এরপর ১৯৯১ সালে এ ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা স্বাধীন বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাইলফলক এবং যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় আরো তিনটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক গোলাম আযম বেশ কিছু আলোচিত গ্রন্থের প্রণেতা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পলাশী থেকে বাংলাদেশ, ইকামতে দ্বীন, মনটাকে কাজ দিন, তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘জীবনে যা দেখলাম’। এ ছাড়া তার বেশ কিছু অনুবাদ গ্রন্থও রয়েছে।
অধ্যাপক গোলাম আযমের ছয় ছেলে। এর মধ্যে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী দেশে আছেন। তার স্ত্রী সৈয়দা আফিফা আযম জীবিত আছেন।
গ্রেফতার ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ : মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলার কার্যক্রম শুরু হলে অধ্যাপক গোলাম আযমকে ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ মোতাবেক তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হলে সে দিনই তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অধ্যাপক গোলাম আযমকে ৯০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ও সরকার পক্ষ পৃথক আপিল করেছিলেন। যার শুনানি আগামী ডিসেম্বরে হওয়ার কথা ছিল।
মন্তব্যসমূহ