আমের গুটি এসেছে গাছে

6
Untitled-1
তবিবুর রহমান মাসুম: রাজশাহীতে বাড়ছে আমের আবাদ। একই সাথে বাড়ছে উৎপাদনও। গত ৮ বছরের ব্যবধানে উৎপাদন বেড়েছে দ্বি-গুনেরও বেশি। ফলন ও লাভ দুই-ই বেশি হওয়াতে অনেকেই এখন আম আবাদের দিকে ঝুঁকছেন।
সুমিষ্ট ও রসালো আমের জন্য সারাদেশ খ্যাত ও বিশেষভাবে পরিচিত ‘আমের রাজধানী’ রাজশাহী। রাজশাহীর ফজলি, গোপালভোগ, খিরসাপাত, রানী পসন্দ, ল্যাংড়া, বারি-৩ (আম্রপলি) ও আশ্বিনা জাতের আম দেশ সেরা। এছাড়াও রয়েছে গুটি জাতের বেশ কিছু আম। রাজশাহীর প্রায় এলাকাতেই আমের আবাদ হয়। এর মধ্যে বাঘা, চারঘাট ও পবায় আবাদ হয় বেশি। ফলন ও লাভ বেশি হওয়াতে অনেকেই এখন আম আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। অনেকে অন্য ফসলের জমিতে এবং অন্য ফসলের সাথেও আমের আবাদ করছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ২০০৭-০৮ মওসুমে রাজশাহীতে মোট আবাদী জমির পরিমান ছিল ৭ হাজার ৮৫৪ হেক্টর এবং গাছ ছিল ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮৪টি। ওই বছর আম উৎপাদিত হয় একলাখ ২ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন।
গত মওসুমে অর্থাৎ ২০১৪-১৫ মওসুমে রাজশাহীতে আমের আবাদ হয় ১৬ হাজার ৫৮৩ হেক্টরে, আর আম উৎপাদন হয় ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৭৯ মেট্রিক টন। গতবছরের আবাদ ও উৎপাদনই এবার ২০১৫-১৬ মওসুমের লৰমাত্রা।
৮ বছরের ব্যবধানে রাজশাহীতে আমের আবাদ বেড়েছে ৮ হাজার ৭২৯ হেক্টের জমি, আর উৎপাদন বেড়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৬২৯ মেট্রিক টন, সবমিলিয়ে যা দ্বিগুনেরও বেশি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের সূত্র মতে, এ বছর গাছে প্রচুর মুকুল আসে প্রচুর। রোগ-বালাইও খুব একটা দেখা যায়নি। আবহাওয়া বিশেষ করে কুয়াশা এবার কম থাকায় মুকুলের খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর আলীম উদ্দীন জানান, আগাম জাতের গাছে ইতোমধ্যে গুটি তৈরি হয়ে গেছে। বাকিগুলোতে মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ গুটি চলে আসবে।
তিনি আরো বলেন, সাধারণত আমগাছে মুকুল আসার পর হপার পোকার আক্রমন দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ি পোকা মারা কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করেছেন আম চাষীরা।
তাঁর মতে, এখন আর অফ ইয়ার বা অন ইয়ার বলে কিছু নেই। পরিচর্যার কারণে মুছে যাচ্ছে অফ ইয়ার, অন ইয়ার, বাড়ছে ফলন। সার, পানি, সেচ, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন ও অন্যান্য পরিচর্যার মাধমে আমের ফলন বাড়ানো সম্ভব।
তিনি আরো জানান, এবছর কুয়াশা বা রোগ বালাই না থাকলে ঝড়ের আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এর পরেও এবার লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মন্তব্যসমূহ