সেলিনা জাহান প্রিয়া ছোট গল্প: লাভ অ্যাট ফাস্ট সাইট

21-12-15
সেলিনা জাহান প্রিয়া: কোন এক শীতের সকাল। ছেলেটা একটা শপিং কমপ্লেক্সের ভিতর এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করতে থাকে। একসময় তার চোখ পড়ে যায় একা একটা মেয়ে কাকে জানি অনেকক্ষণ যাবত খুঁজছে । মেয়েটা সেল ফোন টা খুলে ব্যাটারি দিকে একটা মুখ ভেংচি কাটলো । মেয়ের হাসিটা ছিল অপূর্ব রকমের সুন্দর , ছেলেটা প্রথম দেখায় মেয়েটার প্রেমে পড়ে যায়। এটাই মনে হয়, Love At First Sight. ছেলেটা সামনে এগিয়ে বলল আমার ফোন থেকে কল করতে পারেন । মেয়েটা কোন কথা না বলে ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল । মেয়ে বলল – আমার নাম্বার মনে নেই । আমার বান্ধবিদের সাথে এসেছি । এত বড় শপিং মল খুঁজে পাচ্ছি না।
— কত ক্ষণ যাবত ।
– এই যে ৩০ মিনিট ।
– এখন বলুন আমি একা মেয়ে মানুষ কি করি ?
— আরে এটা কোন সমস্যা । ঐ ফোনের দোকানে চলুন । ওদের কাছে চার্জার আছে ।
— আমার কাছে টাকা নেই চারজার কেনার ।
– আরে কিনতে হবে না । চলুন আমার সাথে ।
ছেলেটা মেয়েটা কে নিয়ে মোবাইলের দোকানে যায় সেল ফোন চার্জ দেয় ।
ছেলেটা একটা চুইং গাম দেয় । মেয়েটা হাসি মুখে গ্রহন করে ।
মেয়েটা ফোনের পর ফোন দেয় । কিন্তু যাকে ফোন দিচ্ছে সে ফোন রিসিভ করে না।
মেয়েটা কে একটা সি অ্যান জি ভাড়া করে দেয় । মেয়েটা শুধু বলে আমার বাসা উত্তরা রাজলক্ষির পিছনে ।

ছেলেটা রোজ মটর সাইলে উত্তরা যায় কোন দিন সকালে । কোন দিন বিকালে , কোন দিন রাতে । আর মেয়েটা কে খুঁজে ।
মেয়েটাও প্রায় আসে শপিং মলে মনে মনে ছেলেটাকে খুঁজে ।
না কারো সাথে কারো দেখা হয় না।
ছেলেটা তার বোন কে নিয়ে বিশ্ববিদালেয়ে যায় । ঠিক মেয়েটা তার বড় ভাইয়ের সাথে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে । অবাক হয়ে দু জন দু জন কে দেখে । কিন্তু অজানা ভুলে কেউ কারো সাথে কথা বলে না । মেয়েটি ভাবে ওর গার্ল ফ্রেন্ড কষ্ট পাবে । ছেলেটা ভাবে না ওর বয় ফ্রেন্ড যদি মাইন্ড করে ।
শুধু দু জন দু জনের দিকে চেয়ে থাকে । মেয়েটা যখন গাড়িতে চরে । ছেলেটা বোন বলে কি ব্যাপার ভাইয়া এই মেয়েটার দিকে কেন এভাবে চেয়ে আছো । ছেলেটা বলে
– আরে পাগল আমি তো রোজ এই মেয়েটাকে খুঁজি ।
— তাহলে কথা বললে না কেন ওর সাথে
–ওর সাথে তো দেখা যায় বয় ফ্রেন্ড ।
— আমি তোমার কি হই?
— তুই আমার বোন ।
— তাহলে তো ঐ মেয়েটার ভাই ও হতে পারে !
— ঠিক তো । তুই নাম মটর সাইকেল থেকে । এই নে গাড়ি ভাড়া করে যা ।
ছেলেটা গাড়ি খুঁজতে থাকে। একটা সিগনালে মেয়েটাকে পায় । গাড়িতে চুপ করে বসে আছে । কিছু বলে না, শুধু হালকা ইশারা দেয় । ছেলেটা হাসে  মেয়েটা ও য়তহাসে ।
একসময় দেখে মেয়েটা নেমে গেল বাসার সামনে ও দূর থেকে দেখে । মেয়েটা ঘাড় ফিরিয়ে দেখে ।
ছেলেটা গেইটের সামনে আসলেই দারোয়ান তাকে একটা কাগজ দেয় তাকে লিখা স্যাম টাইম স্যাম প্লেস ।
ছেলেটা রাতে আর ঘুম যায় না বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখে চাঁদ দেখে , গান শুনে । মেয়েটা ও তাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে ।
ছেলেটা খুব সকালে শপিং মলের সামনে চলে আসে তখন শপিং মল খুলে নাই । মেয়েটা আগেই চলে আসে, এসে দেখে ছেলেটা দাঁড়িয়ে, মেয়েটা হেসে  ছেলেটা ও হাসে। মেয়েটা একটা চুইং গাম বের করে ছেলেটা কে দেয় ।
[গল্পের এই পর্যায়ে এসে ছেলেটার আর মেয়েটার নামকরণ করা যাক। ধরা যাক ছেলেটার নাম অরন্য আর মেয়েটার নাম প্রিয়া ।]
পরশুদিন বিকাল। এক ঘন্টা ধরে মেয়েটা কফিশপে অপেক্ষা করছে ছেলেটার জন্য। ছেলেটার অনুপস্থিতি দেখে একসময় মেয়েটা ডায়াল করে ছেলেটার ফোন নাম্বার। ছেলেটার বোন ফোন রিসিভ করে।
– হ্যালো
— অরন্য আছে? ওকে একটু দেওয়া যাবে?”
– কে বলছো তুমি?”
— আমি প্রিয়া”
– প্রিয়া, তুমি কি জান না ‘ গতরাতে ভাইয়া রোড অ্যাক্সিডেন্টে করেছে ।
— ও এখন কোথায়
— হাসপাতালে ।
প্রিয়া তারা তারি হাসপাতালে আসে । অরন্যের জ্ঞান ফিরে নাই । প্রিয়া অরন্যের কাছে আসে । অরন্যের হাতে হাত রাখে । কিছু সময় পড়ে অরন্য তার হাতের ছোঁয়ায় আস্তে আস্তে চোখ মেলে । এক জন অন্য জনের হাত ধরে রাখে । অরন্য তার পকেট থেকে একটা চুইং গাম বের করে দেয় কিন্তু চুইং গাম খুলে দেখে একটা কাগজ । তাতে লেখা আছে, “কেন জানি তোমাকে আমার অসম্ভব রকমের ভালো লেগে গেছে। আমরা কি কোন একদিন এক সাথে একটা সেলফি ছবি তুলতে পারি ।










মন্তব্যসমূহ