বান্দরবানে বিশুদ্ধ পানি সংকট-গ্রামবাসীরা পান করছে ঝিরি-ঝর্ণার দূষিত পানি



সেলিনা জাহান প্রিয়া ঃ- ন্দরবানে গ্রীষ্মের শুরুতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট ও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের আদিবাসীরা এখন পানিয় জলের পিপাসায় কাতর, যার কারণে বর্তমানে পানিয় জলের চাহিদা মেটানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নলকূপ,ড্রিপ নলকূপ, ঝিরি-ঝর্ণার, পুকুর, ছড়া, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ঝিরি-ঝর্ণা, খাল-বিল ও ছড়ার দূষিত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। যার ফলে পানি বাহিত রোগ-ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ও টাইফয়েডসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে|

জেলায় ৭টি উপজেলার আনাচে কানাছে স্থাপিত বেশীরভাগ রিংওয়েল ও টিউবওয়েল গুলোতে পানি নেই বললে চলে। দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। দুর্গম এলাকার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার চিত্র আরো ভয়াবহ। প্রতিবছর শুল্ক মৌসুমে পানীয় জলের সংকট থাকলেও সমাধানে সরকারি-বেসরকারি কোন পর্যায়ে সমন্বিত কোন উদ্যোগের খবর নেই|
জেলার থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় আদিবাসী ও বাঙ্গালী নারীরা পানিয় জলের অভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা পায়ে হেটে কয়েক মাইল পাহাড়ী পথ পাড়ি দিয়ে পানিয় জল সংগ্রহ করছে ঝিরি-ঝর্ণা, খাল-বিলের গর্ত সৃষ্টির মাধ্যমে|
জানা গেছে, রুমা উপজেলার- বগালেক, নীলগিরি পাশে এম্পু পাড়া। থানচি উপজেলার -বলিবাজার, হলিরাম পাড়া, বড় মদক, ছোট মদক, রেমাইক্রি।রোয়াংছড়ি উপজেলার-খক্ষ্যং হেডম্যান পাড়া, মহিলা কারবারি পাড়া, থুলী পাড়া, বেঙ্গছড়ি পাড়া। লামা উপজেলার- গজালিয়া ইউনিয়নে আকিরাম পাড়া, গতিরাম পাড়া,নাজিরাম পাড়া, চিংয়ং পাড়া, কোলাক্যা পাড়া, অংথোয়াইমং পাড়া,কংচারী পাড়া, কাইপা পাড়া, তুলাতুলি ম্রো পাড়া, চিন্তাবড় পাড়া, লুলাই মুখ বাজার। রূপসী পাড়া ইউনিয়নে- তাউ পাড়া, কলা ঝিরি, লংক্ষ্যং পাড়া, মেদুমা পাড়া এবং সরই ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে রিংওয়েল ও টিউবওয়েল গুলোতে মিলছে না পানি|
আলীকদম উপজেলায় উত্তরপালং পাড়া, পূর্বপালং পাড়া, প্রভাত পাড়া, সিলেটি পাড়া ও আবুমাঝি পাড়া, বাঘেরঝিরি, যোগেন্দ্র পাড়া, তারাবনিয়া, রোয়াম্ভূ বশির সর্দার পাড়া, নয়া পাড়া এলাকায় যে সব নলকূপ ও রিংওয়েল রয়েছে সেগুলোতে পানি পাচ্ছে না। আর পানিয় জলের জন্য হাহাকার অবস্থা সৃষ্টি হয় পোয়ামূহুরী, কুরুকপাতা, দোছরী ও মাংগু পল্লীগুলোতে। সেখানে শতাধিক পরিবারের বসবাস করলেও সেখানে এখন নিরাপদ পানির উৎস বলতে নেই|
এ ব্যাপারে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, জেলায় নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, অবাধে পাথর উত্তোলনে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে, তাই গ্রীষ্মের শুরুতেই পানির সংকট দেখা দেয়|
এ দিকে বনাঞ্চলে উজাড়, অবাধে পাথর উত্তোলন বন্ধ, অকেজো রিংওয়েল ও নলকূপ গুলো সংস্কার এবং দুর্গম পাহাড়ী জনপদের গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির সংকট কমে আসবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা|
উথোয়াই মারমা,বান্দরবান । আদি বাসী বার্তা থেকে পাঠিয়েছেন ।। 
Attachments area

মন্তব্যসমূহ