২০১৫ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের সাফল্যের গল্প যতবার শোনা যায়, ততবারই অনুভব হয় নতুন করে শোনার অনুভূতি। মুস্তাফিজ নিজেও কি ভেবেছিলেন ২০১৫ সালটা এভাবে দুহাত ভরে দেবে? উত্তরটা শুনতে খানিকটা বেগই পেতে হলো।
মুস্তাফিজ যেন হারিয়ে যান যখন তার নিজের গ্রামে আসেন। ভাই-বন্ধু, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সময়টা দারুণই উপভোগ করেন। অল্প সময়ে যতই তারকাখ্যাতি পান, আপন ভুবনে মুস্তাফিজ আছেন আগের মতোই। ঘোরাঘুরি এক ফাঁকেই মুঠোফোনে বললেন, ‘আল্লাহ ভালো কিছু করার সুযোগ দিয়েছে, তাই চেষ্টা করছি দেশের ভাব মুর্তি উজ্বল করতে। তবে স্বপ্নেও ভাবিনি, ২০১৫ সালটা এত ভালো যাবে, এ রকম যাবে। চেষ্টা করব নতুন বছর আরও ভালো করতে। বাকিটা ওপরঅলার ইচ্ছা।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন দারুণ শুরুর পর লক্ষ্যটা নিশ্চয় আরও বড় হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে নিজের স্বপ্ন নিয়ে প্রসঙ্গে একবার জানিয়েছিলেন, ‘বাংলাদেশ দলে অন্তত ১০ বছর খেলতে চাই। যেহেতু বোলার, দীর্ঘদিন খেলতে ফিটনেস ঠিক রাখাটাও জরুরি।’ এখন অবশ্য স্বপ্নের কথাটা জানালেন খানিকটা ঘুরিয়ে, ‘যেখানে সুযোগ পাই, সেখানেই ভালো করার স্বপ্ন দেখি।’
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ডাক পাওয়া বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারের মুস্তাফিজ অন্যতম একজন। যার উপর নির্ভর করে ম্যাচের হার জিত। এই প্রথম দেশের বাইরের এমন একটা বড় লিগে খেলতে গেলেন।অন্যদিকে বিগ ব্যাশ, সাক্সেস তো রীতিমত কারা-কারি মুস্তাফিজকে নিয়ে। সামনে একের পর এক টি-টোয়েন্টি মিশন। মুস্তাফিজ এখন সেখানেই রাখছেন চোখ। বেশি দূরে তাকানোর অভ্যাস নেই। অতটা তাকাতেও চান না। সাদামাটা এই তরুণের স্বপ্নটাও সাদামাটাই।
খেলার বাইরেও তেমন স্বপ্ন-টপ্ন নেই তার। তবে জানালেন, ‘বাড়ি আসলে সবাইকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে। এই ভালো লাগাটা আজীবন ধরে রাখতে চাই।’ বদলে যেতে চান না। তারকাখ্যাতি, যশ-বিত্ত যাই আসুক না কেন। এখনো তার গ্রামই তার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা জায়গা।
গেল বছরে বাংলাদেশ যেভাবে সাফল্য উপহার দিয়েছে, প্রত্যাশার বেলুনটা আরও বড় হয়েছে। যে দল দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তানকে অনায়াসে হারাতে পারে, তারা কেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখবে না? যদিও বাস্তবতা কঠিন। তবুও স্বপ্ন দেখতে তো সমস্যা নেই। বাংলাদেশ কবে জিতবে একটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট? ভবিষ্যতের কথা বলা কঠিন।
তবে দলে থাকতে থাকতেই মুস্তাফিজের চাওয়া একটি বড় শিরোপা জেতা, ‘এখনই তো এটা বলা কঠিন। সবাই তো জিততেই চায়। আমারও প্রতিটি ম্যাচ জেতার জন্যই খেলি। কেউ নিশ্চয় হারতে মাঠে নামে না। যদি ওপরঅলা চাই, তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতেও পারি। আর আমি দলে থাকতে থাকতে যদি এমন একটা টুর্নামেন্ট জিততে পারি, সেটি হবে অন্যরকম পাওয়া।’
মন্তব্যসমূহ