গত এক মাস ধরে অদৃশ্য স্থান থেকে দিনে রাতে ইট-পাথরের টিল আসছে। এতে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হারাটি ইউনিয়নের কাজীরচওড়া গ্রামের পাঠানপাড়া নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে এ ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়রা বিষয়টিকে ‘জিনের’ ঢিল ও হামলা বলে দাবি করছেন।
এদিকে কয়েকদিন ধরে অব্যাহত ঢিল ছোড়ার কারণে মাদ্রাসায় পড়ুয়া ৫ ছাত্র আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার ওই মাদ্রাসায় গিয়ে হামলার অদ্ভুত কিছু আলামত দেখা যায়। মাদ্রাসা এবং মসজিদের ছাদে পড়ে আছে পাথর, ইট আর ইটের খোয়া।
মাদ্রাসার টিনের বেড়াগুলোতে অসংখ্য ছিদ্র হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের বাল্ব ভাঙা অবস্থায় ঝুলে আছে। বাকা হয়ে আছে বৈদ্যুতিক পাখা। ইট ও পাথরের ঢিলের কারণে ভেঙে গেছে মাদ্রাসার সোকেসটিও। এ ভয়ে কেউ আর সেই কক্ষে প্রবেশ করছে না।
মসজিদ ও মাদ্রাসাটিকে ঘিরে উৎসুক জনতা ভিড় করছে। স্থানীয়রা জানান, প্রথমদিকে রাতে ঢিল আসতো। গত এক সপ্তাহ থেকে দিন রাত সমানে ঢিল আসছে।
মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মো. এনামুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, সম্প্রতি মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদ ভবনটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ কারণে মসজিদের পেছনের জমিতে বাঁশঝাড় কেটে দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য ফাউন্ডেশন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মসজিদ কমিটি।
বাশঁঝাড়টি কেটে ফেলার পর থেকেই ইটের টুকরো আর পাথরের ঢিল আসতে থাকে। হয়তো বাঁশঝাড়ে জিনদের অবস্থান ছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালাচ্ছে তারা বলেই মনে করেন ওই মাদ্রাসার পরিচালক।
তিনি জানান, জিনের হামলা রোধে স্থানীয় আলেম-ওলামা নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজই আসছে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ আলী খান বলেন, মসজিদ কিংবা মাদ্রাসার জমিজমা নিয়ে কারো সাথে কোনো বিরোধ নেই। অদৃশ্যভাবে ঢিল আসার পেছনে ‘জিনরাই’ কারসাজি রয়েছে।
জানা গেছে, পাঠানপাড়া নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিংটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রায় ৪৫ শতক জমির ওপর মাদ্রাসাটির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৫ জন। এ ঘটনায় মাদ্রসা ও মসজিদটি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইসএম মাহফুজার রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মসজিদ ও মাদ্রাসায় ঢিল ছোড়ার কোনো ঘটনা জানা নেই। এ নিয়ে থানায় কেউ অভিযোগও করেনি।
মন্তব্যসমূহ