মুসলমাণ সবার জন্য রোজা ফরজ। গর্ভবতী ও নতুন মায়েরা হয়ত ভাবছেন রোজা রাখতে পারবেন কি না। গর্ভবতী নারীরাও রোজা রাখতে পারবেন, সংশয়ের কিছু নেই। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। গর্ভকালীন সময়ে নারীর বেশির ভাগ খাবারে অরুচি দেখা দেয়। ফলে তারা রাতে সেহেরিতে খেতে চান না। এটা একেবারেই ঠিক নয়। এতে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। শুধু তাই নয় সেহেরি না খাওয়ার কারণে এক সময় আপনিও দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। কাজেই এ সময়ে নিজের প্রতি আরো বেশি যত্নবান হোন। এতে বাচ্চার পাশাপাশি আপনিও সুস্থ থাকবেন।
যেসব খাবার সেহেরিতে খাবেন:
সেহেরিতে আঁশ জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খান। এতে খাবার সহজেই হজম হবে। পরিমাণ মতো ভাত, মাছ ও মাংস খেতে পারেন। তবে খাবার পর এক গ্লাস দুধ খেলে বেশি ভালো হয়। চাইলে যে কোন ফল খেতে পারেন।
ইফতারে যা খাবেন:
ইফতারে গর্ভবতী নারীরা খেজুর, ফলের রস, দুধ, সালাদ, ভ্যাজিটেবল স্যুপ প্রভৃতি খেতে পারেন। হালিমও খেতে পারেন। কারণ এটি প্রোটিনের ভাল উৎস এবং এতে চর্বির পরিমাণও কম। এছাড়া তেল ছাড়া তৈরি ছোলার সঙ্গে একটু লেবু, লবণ এবং অল্প মসলা যোগ করে খেতেও পারেন। চিড়া-দইও গর্ভবতী নারীদের জন্য বেশ ভাল ইফতার হতে পারে।
রাতে যা খাবেন:
রাতের খাবারে গর্ভবতী নারীরা বাদামি চালের ভাত, মুরগি, মাংস, মাছ, ডাল, ছোলা বা সীম এবং প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খান। খাওয়া শেষে এক বাটি ফলের সালাদ কিংবা দইও খেতে পারেন। গর্ভকালীন সময়ে তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন।
রাতের খাবারের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন এবং তারপর বাকি কাজ করুন। ঘুমানোর আগে অন্য কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তবে পানিশূন্যতা রোধে ইফতার এবং সেহেরির মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন।
রোজা রেখে সারাদিনের কাজকর্ম:
গর্ভবতী নারীদের রোজার সময় একটু বেশি সময় বিশ্রাম নিতে হয়। এ সময়ে স্বাভাবিক সব কাজকর্ম করবেন। ভারী কাজ একদমই করবেন না। এমনকি একেবারে দরকার না পড়লে সিড়ি বেয়েও উঠা-নামা করবেন না।
মনে রাখবেন যেসব বিষয়:
১. রোজার সময় চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ঔষুধ খাবার পরিবর্তিত নিয়ম জেনে নিন। সে অনুযায়ী ঔষুধ সেবন করুন।
২. গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস কিংবা হাই ব্লাড প্রেশার থাকলে রোজা না রাখাই ভালো।
৩. গর্ভাবস্থায় ইফতারের পাশাপাশি রাতের খাবারটিও সময়মতো খেয়ে নিন। তা না হলে বাচ্চা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না।
৪. সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন।
৫. গর্ভাবস্থায় রাতের খাবারের পর বেশি রাত না জেগে সময়মতো ঘুমিয়ে পড়ুন। এতে আপনার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাও ভালো থাকবে।
তবে গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে গিয়ে যদি কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তবে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নিয়ম মেনে প্রচুর পরিমাণে সবজি ও ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে রোজা রাখতে আপনার আর কোন সমস্যা হবে না।
মন্তব্যসমূহ