ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর আসনের উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে সংসদ সদস্য পদে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ ও দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজনীন আলমকে নিয়ে মাঠ সরগরম।
যদিও এই আসনে জাতীয় পার্টি, ন্যাপ, ইসলামী ঐক্যজোট ও স্বতন্ত্র থেকে পৃথক আরো চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে ভোটের মাঠে তাদের নিয়ে খুব বেশি একটা আলোচনা নেই।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশায় প্রায় দুই ডজন প্রার্থী প্রচারণা ও কেন্দ্রে তদবির শুরু করেন। এরমধ্যে ২১ প্রার্থী দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন। ১৬ জুন গণভবণে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রার্থী হিসাবে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে অন্য প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। মনোনয়নের শেষদিন সোমবার জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন দলের মনোনয়ন বঞ্চিত বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক নাজনীন আলম। ফলে তাকে নিয়ে ভোটের মাঠে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে।
দলের তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিন জেলা শহরের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হলেও গৌরীপুরের রাজনীতি ও মানুষের মধ্যে তার আনা-গোনা একটু কম। তাই নাজনীন প্রার্থী হওয়ায় দলের অনেকেই তার নির্বাচন করতে পারেন। এবং নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা জানান, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই। কারণ নাজিম উদ্দিন একজন বর্ষীয়ান নেতা ও দলের মনোনীত প্রার্থী। উনার রাজনৈতিক যোগ্যতার ধারে কাছেও নেই নাজনীন আলম। দলের চাপ আছে নাজনীন আলম মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার মনে হয় না নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। দলের নেতাকর্মীরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। নৌকা প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত।’
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজনীন আলম বলেন, ‘এলাকার সাধারণ ভোটার ও সমর্থকদের চাপ আছে নির্বাচন করার জন্য। দলের চাপ আছে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য। এই উভয় সংকটের মধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। সময়ই বলে দিবে কী সিদ্ধান্ত নেব। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা আসলে সেটার প্রতি সম্মান জানাবো।’
গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা নাজিম ভাইকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষে কাজ করবো। বিদ্রোহী প্রার্থী যেনো না থাকে সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২ মে সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যপ্টেন (অব) মজিবুর রহমান ফকির এমপির মৃত্যুর পর গৌরীপুর আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১৮ জুলাই এ আসনে উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্যসমূহ