বাংলাদেশের ১১ বোলারের অ্যাকশন পরীক্ষা চলছে

২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ চলার সময় অবৈধ অ্যাকশনের জন্য বাংলাদেশের দুই বোলারকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে এই সমস্যা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বিসিবি। সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে বোলারদের ওপর নজর রাখা হয়। মোট ১১ জন বোলারের বোলিং সন্দেহজনক বলে সনাক্ত করেন আম্পায়াররা। এখন ক্যামেরা এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবহার করে তাদের বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষার কাজ শুরু করলো বিসিবির বোলিং রিভিউ কমিটি।
প্রায় দশ বছর পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষার আবার উদ্যোগ নেয়া হলো। মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশেই ইনডোর প্রাকটিস ফ্যাসিলিটিতে এই পরীক্ষা চলছে। গিয়ে দেখা গেলে চারদিকে মোট ছয়টি ক্যামেরার মাঝখানে একজন বোলার বল করছেন আর সেটি ভিডিও করে রাখা হচ্ছে। পরে এই ভিডিও যাচাই করে দেখা হবে তার বোলিং অ্যাকশনে কোন ত্রুটি আছে কিনা। বিসিবি বলছে এটা সবেমাত্র শুরু। পরে আরো বড় আকারে তারা সন্দেহজনক বোলারদের সনাক্ত করে শোধরানোর ব্যবস্থা করতে চান।
বিসিবির মুখপাত্র জালাল ইউনুস বলছেন, “অবৈধ বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ক্রিকেট চলতে পারেনা। বিশেষ করে এখন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন লীগ ও এজ গ্রুপ টুর্নামেন্টে কোন কোন বোলারের অ্যাকশনে ক্রুটি রয়েছে। এখন থেকেই তাদের কেয়ার নিতে হবে। যাদের সমস্যা আছে, আমরা চেষ্টা করবো অ্যাসেসমেন্ট করে সেটা ঠিক করে দেয়ার। এরপর তাদের আবার খেলার সুযোগ দেয়া হবে। এরপরও তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট এলে আমরা আবার ঠিক করে দেবো।
” তিনি বলেন, কিন্তু তারপরেও ঠিক না হলে বোলার এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হবে। তৃণমূল ক্রিকেটে গলদ রয়েছে? বিসিবি কর্মকর্তারা বলছেন, সারাদেশের সব ক্লাব, টুর্নামেন্ট নজরদারিতে রাখা সম্ভব না হলেও, জাতীয় পর্যায়ের সব বয়সের সব লীগে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে, যাতে সেখানে অংশ নেয়া কোন বোলারের ক্রুটি থাকলে, সেটি সনাক্ত করা যায় এবং শোধরানোর ব্যবস্থা করা যায়।
বাংলাদেশের সাবেক ওয়ানডে ক্রিকেটার আনোয়ার হোসেন মনির বিবিসিকে বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে অনেক সময় বোলারের ভুলগুলো ধরা সম্ভব হয় না, কারণ সেখানে ভালো কোচ থাকে না। কিন্তু সে যখন বড় লীগ বা জাতীয় পর্যায়ে খেলতে আসে, তখন ধরা পড়ে। “আবার চাকিং নিয়ে অনেকের হয়তো ভালো ধারণাও নেই।
” তবে আন্তর্জাতিক নামী খেলোয়াড়দের এ ধরণের সমস্যার বিষয় বেরিয়ে আসার পর এখন অনেক বোলারই নিজেদের ব্যাপারে সতর্ক হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশে সর্বশেষ এরকম উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, দশ বছর আগে ২০০৬ সালে।
সে সময়ের তালিকায় থাকা কেউ কেউ রয়েছেন এবারের তালিকাতেও। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির সিনিয়র কোচ এবং রিভিউ কমিটির সদস্য, দিপু রায় চৌধুরীর মতে, প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতার অভাবে হয়তো তৃণমূল পর্যায়ে এসব সমস্যা ধরা যায়না। তবে শেষপর্যন্ত এর ভুক্তভোগী হয় ক্রিকেটাররাই। তিনি বলছেন, সন্দেহ হলে একজন বোলারেরই গিয়ে আসা উচিত।
“কোনও আম্পায়ার যদি কাউকে বলে যে, তার হাত বাঁকা করছে, তাহলে তার উচিত কোচের সঙ্গে যোগাযোগ করা … আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। আমরা অবশ্যই তাদের সাহায্য করবো। ত্রুটি থেকে গেলে ভবিষ্যতে তাদের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে।

মন্তব্যসমূহ