শেখ হাসিনার দিন বোধয় শেষ হয়ে আসছে! তার বাবা কবর থেকে তাকে ইশারা করে ডাকছে। এটা আমার আশঙ্কা নয়, এটা হাসিনার সবচে কাছের মানুষের আশঙ্কা। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফের কথা। শুধুমাত্র আশঙ্কা বা রাজনৈতিক স্টেটসম্যান নয়; নিশ্চিত হয়েই তিনি এ বার্তা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের এ বার্তা জানান।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দেব না। যা বলব ইশারা-ইঙ্গিতে বুঝে নেবেন। যার ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছি স্বাধীনতার কয়েক বছরের মাথায় তাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। দেশে যাতে পঁচাত্তরের মত এমন কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় এর জন্য সবার সজাগ থাকার প্রয়োজন আছে। আপনাদের সব সময় মনে মনে একটা প্রস্তুতি রাখা দরকার। ঝড়-বৃষ্টি নাই, গাছের পাতা নড়ছে না, তখন বুঝতে হবে একটা কিছু হতে পারে। তাই আমি ইঙ্গিত দিয়ে বললাম সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বাঙালি যেমন বীরের জাতি, তেমনি বেইমানের জাতি। তাই আমাদের সজাগ থাকার প্রয়োজন আছে। মনে মনে প্রস্তুতি রাখারও প্রয়োজন আছে।
…জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক যখন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু সংবাদ শোনার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলছেন তখন এটাকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। কারণ তিনি বলেছেন, এটা তার রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। তিনি দলের নেতাকর্মীর সামনে হাসিনার পরিণতি যে তার বাবার মতো হবে সে রকম একটি বার্তা দিলেন। সৈয়দ আশরাফ বুঝে গেছেন, কারা তার দলের সভানেত্রীকে হত্যা করবে। এরআগেও তিনি এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি জাসদের গণবাহিনীর সন্ত্রাসী কার্যক্রম তুলে ধরে নেতাকর্মীকে সাবধান করে দিয়ে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্লট ইনু বাহিনীই তৈরি করেছিল। সেসময় জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদসহ অনেক মন্ত্রী এমপি সংসদে এ বিষয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন। এ বিষয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হাসিনার আত্মীয় মাহবুবুল আলম হানিফও সোচ্চার ছিলেন। সৈয়দ আশরাফ শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করে বলেন, ইনুকে মন্ত্রী বানানোই সবচে বড় ভুল হয়েছে। আওয়ামীলীগ সরকারকে তার বড় খেসারত দিতে হবে।
ঐ বক্তব্যের পর আবার হঠাৎ করেই শেখ হাসিনার অবস্থা ৭৫ এর মতো হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করার পিছনে কারণ কী স্পষ্ট নয়?
পাঠক, সৈয়দ আশরাফের দুটো বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয়ে যে, শেখ হাসিনার অবস্থা তার বাবার মতো হবে। এবং সে অবস্থা সৃষ্টি করবে জাসদের ইনুবাহিনী। যেটা ৭৫ সালে করেছে সেটা ২০১৬ তেও ঘটবে। অর্থাৎ, মুজিবের হত্যার পটভূমি যারা নির্মাণ করেছিল তারাই আজ হাসিনার হত্যার পটভূমি নির্মাণ করছে।
তবে প্রশ্ন উঠতে পারে কিভাবে করবে? তারও একটা সূত্র পাওয়া যায় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের বক্তব্যে। তিনি বলেন, দেশে বিভিন্ন সময় অগণতান্ত্রিক শাসনের কারণে জাতীয় নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই এখন আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রভাবের বিষয়টি লক্ষ করছি। বুধবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) দিনব্যাপী একটি সেমিনারের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারিক সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠসূত্রগুলো বলছে, উক্ত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের বুদ্ধিতে অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় বসে আছে তারাই জাতীয় নিরাপত্তা অর্থাৎ স্পেসিফিকভাবে বললে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে সৃষ্ট যে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ তার নেপথ্যে রয়েছে ভারত ও ইনু বাহিনীর সরাসরি নেতৃত্ব। আর এই জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে হাসিনার নেতৃত্বকে অস্থিতিশীল করে তুলে পিতার মতো করুণ পরিণতির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। এবং তার দায় চাপানো হবে বেগম জিয়ার ঘাড়ে। অর্থাৎ, বিএনপি- জামায়াতের ঘাড়ে। ইনু গংরা চাচ্ছে এক ঢিলে দুই পাখি মানে দুই শত্রুকে শেষ করতে। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ স্বাধীনতাত্তোর সময়ে ৩০ হাজার জাসদ সন্ত্রাসীদের হত্যা করেছিল। সে প্রতিশোধ জাসদ নিবে হাসিনাকে হত্যা করে এবং আ’লীগের রাজনীতি ধ্বংস করে দিয়ে। আর ইসলাম মনোভাবাপন্ন দল হওয়ায় বিএনপিকেও শেষ করে দিতে চায় জাসদ। আর জামায়াতকে শেষ করাই দলটির অন্যতম মিশন। এদিকে, ভারতও চাইছে বাংলাদেশে এমন নেতৃত্ব রাষ্ট্রপরিচালনা করুক যাদের জনগণের মধ্যে ভিত্তি দূর্বল। তাতে করে পোষ মানাতে সুবিধা হবে। শেখ হাসিনা যতই ভারতের কাছে আনুগত্য দেখাক তবুও ভারত স্বস্তি পাচ্ছে না। ভারত চায় এমন দূর্বল ও জনবিচ্ছিন্ন সরকার যে সরকার সম্পূর্ণভাবে ভারতের উপর নির্ভরশীল থাকবে। আরযে সরকারের বিন্দুমাত্র
মন্তব্যসমূহ