মুক্তাগাছায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বিদ্যুৎ বিল আট গুণ

মুক্তাগাছা(ময়মনসিংহ )প্রতিনিধি :ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ অভ্যন্তরে ঘুষ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে  । কর্তৃপক্ষের সামাণ্য দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ ফেসবুকে স্টোস দেয়ায় এক ব্যক্তির বিদ্যুৎ বিল ৮ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে ।
মুক্তাগাছার নন্দীবাড়ির বাসিন্দা ঐ গ্রাহক জানান, প্রতিমাসে আমার বিদ্যুৎ বিল ৫শ’ টাকা থেকে ৬ শ’ টাকা হিসাবে বিল বিতরণ করা হয় । আমি এত টাকার বিদ্যুৎ খরচ করিনা । এমর্মে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার পর এবার বিল ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৮শ টাকা ।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কার্যক্রম চলে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই । অভিযোগে প্রকাশ, গ্রাহকদের নিকট থেকে ঘুষ নিয়ে সমিতি কর্মকর্তা - কর্মচারীর সাথে চুক্তির মাধ্যমে সংযোগ দেয়া হয় । ঘুষ না দিলে সংযোগ মেলে না । ফাইল ঝুলে থাকে বছরের পর বছর ধরে । সংশ্লিষ্ট অভিযোগের আঙ্গুল ওয়ারিং ইন্সপেক্টর, পিইউসি, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (লাইনম্যান), দালাল, রাজনৈতিক দলের নেতা, এলাকা পরিচালক,নিবন্ধিত ইলেকট্রিশিয়ান, মিনি ঠিকাদারদের দিকে ।ঘুষ ছাড়া আবেদন ফাইল অনুমোদন হয় না ।মিটারও লাগে না ।ফাইল অফিসে থাকে না । ফাইল থাকে দালালদের হাতে ।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর ঠিকাদার ডিপোজিট ওয়ার্ক (১০০-৪২) লাইন নির্মাণ কাজে গ্রাহকদের নিকট থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন বা আদায় করেন ।অথচ সমিতি ঐনির্মাণ কাজে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করে ।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর আওতাধীন মুঠোফোন (মোবাইল) প্রত্যেকটি টাওয়ারে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে ঘুষ দিতে হয় ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত । অভিযোগের আঙ্গুল ওয়ারিং ইন্সপেক্টর , পিইউসি, স্টেকিং ইন্সপেক্টর, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (ইএনসি) ,ডিজিএম(ট্যাকনিক্যাল) এর দিকে । জানা গেছে, মোবাইল টাওয়ার কোম্পানীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই ঘুষের টাকা আপ্যায়ণ খরচ ,অফিস খরচ ইত্যাদি খরচ দেখিয়ে ভাউচার করে থাকে । 

মাহবুবুল আলম খাইরুল বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করি । এরপর আমার পাঁচ হাজার টাকা সমিতি কর্তৃপক্ষ ও দালালরা হাতিয়ে নিলেও দীর্ঘদিনেও সংযোগ দেয়া হয়নি । শামীম আহমেদ বলেন, প্রতিটি ঘরে সংযোগ পেতে ১৪ হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হয়েছে । আরিফুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ মুক্তাগাছাস্থ রামচন্দ্রপুর অভিযোগ কেন্দ্রের আওতাধীন ১০ কেভি ট্রান্সফরমার থেকে ৫৩ টি মিটার সংযোগ দেয়া হয়েছে । ট্রান্সফরমারটি পুড়ে যাওয়ায় এলাকার লোকজন এবং চেয়ারম্যান মিলে সমিতি এবং আরই বি পর্যন্ত যোগাযোগ করেন । সংশ্লিষ্টরা ভূক্তভোগীদের তখন জানান, ট্রান্সফরমার বাজেট হয়েছ। রামচন্দ্রপুর অভিযোগ কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মূসাতারেক তিনিও ও বলেছেন আজ শুক্র বার অফিসে বস্ নেই আাগামী কাল শনিবার ট্রান্সফরমার লাগতে পারে। সেই ট্রান্সফরমার লাগাতে হয়েছে আরো ৩/৪ দিন পর তাও আবার তাকে টাকা দিয়ে। সেখানে মোট ১০/১১ দিন বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। নাজমুল হুদা সোহাগ বলেন,, আমার এক মিটার নামাতে ৫০ হাজার টাকা লাগছে । আশরাফ আলী আশু বলেন, মুক্তাগাছাস্থ সমিতির প্রধান কার্যালয়ে ২ বছর আগে ২টি মিটারের জন্য আবেদন করি ।এরপর সমিতির একজন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান । পরিদর্শনকারী তাকে জানান, একটি খুটি লাগবে সেই জন্যে প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ পরবে দুটি মিটার সহ । তারপরেও সম্মানিও দিতে হবে । আহসান হাবিব বলেন,, রাইচ মিলের নাম পরিবর্তনের জন্য গত মার্চে আবেদন করছি, এখন খোঁজ নিয়ে দেখি অফিসে ফাইল নেই । আনাম হোসোইন বলেন, আমাদের এলাকায় প্রতিটি মিটার এবং সংযোগ বাবদ১৪০০০ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়েছে । সেখানে ঘুষ নিয়ে ২০০ টি সংযোগ দেয়া হয় ।হাসাইন সাইদ বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৪ বছর আগে টাকা জমা দিয়েছি । ঘুষ দেইনি বিধায় আজো সংযোগ পাইনি । ইকবাল আহমেদ বলেন, রঘুনাথপুরে লাইন দেয়ার নামে ১ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে ।

মুক্তাগাছাস্থ ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আব্দুর রশিদ মৃধা জানান, সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারী ঘুষের সাথে জড়িত নয় । এব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগও পাওয়া যায়নি ।বহিরাগত কেউ ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে আমার কিছু করার নেই ।

মন্তব্যসমূহ