কন্যা সন্তানের জন্মে হলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ভারতে কন্যাভ্রুণ হত্যা কোনভাবেই রোধ করা যাচ্ছেনা। এর পেছনে রয়েছে কুসংস্কার, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ আর প্রথা। তাই ভারত সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন-প্রতিষ্ঠান কন্যাভ্রুণ হত্যা বন্ধে উদ্যোগী হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভারতের আহমেদাবাদের একটি হাসপাতাল ঘোষণা করেছে, সেখানে কেউ কন্যাসন্তানের জন্ম দিলে, সে সংক্রান্ত সমস্ত খরচ বহন করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই। আহমেদাবাদে প্রায় ৩০ বছরের পুরনো সিন্ধু সেবা সমাজ হাসপাতালের এমন উদ্যোগে সাড়া পড়েছে গুজরাট জুড়ে।

এই মুহূর্তে গুজরাটে প্রতি হাজার জন পুরুষে নারীর সংখ্যা মাত্র ৮৯০ জন। কন্যাভ্রুণ হত্যা রুখতে এবং কন্যাসন্তানের জন্মে উত্সাহ দিতে গত মাসেই এমন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার পরেই ওই হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন প্রায় ১৫০ জন দম্পতি। এমনিতে, এই হাসপাতালে সাধারণ প্রসবের খরচ ৭ হাজার টাকা। সি-সেকশন ডেলিভারির ক্ষেত্রে খরচ ২০ হাজার টাকা। কন্যাসন্তান হলে যার পুরো খরচটাই মেটাবে হাপাতাল।

ওই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মহাদেব লোহানা জানান, ‘‘বছরের পর বছর ধরে আমরা দেখে আসছি প্রসূতিরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রার্থনা করেন, যেন পুত্রসন্তান হয়! ছেলের জন্ম হলে হাসপাতালে মিষ্টি বিতরণ করতেও দেখেছি। কিন্তু, মেয়ে হলে মুখে হাসি ফোটে না যেন! তাই আমরা ঠিক করেছি যখনই কোনও মেয়ের জন্ম হবে, হাসপাতালের ট্রাস্টের তরফে তা উদ্‌যাপন করা হবে।’’

প্রসবের জন্য ভর্তি হওয়া কমল রেড্ডি বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারে গত ৩৫ বছরে কোনও মেয়ে জন্মায়নি। প্রার্থনা করছি যেন কন্যাসন্তানের জন্ম দিতে পারি।’’ শুধু জন্মের খরচই নয়, মেয়ে হলে মা-বাবাকে হাসপাতালে নথিভুক্তিকরণের জন্য দেওয়া ১,১০০ টাকাও ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে, শিশুর পরিবারের সদস্যদের জন্য হাসপাতালেই স্ন্যাক্স পার্টিরও আয়োজন করা হবে। হাসপাতালের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন গুজরাটের ‘সেভ দ্য চাইল্ড’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হাসপাতালগুলি ও চিকিত্সকেরা।

মন্তব্যসমূহ