গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা এসব ঘটনাকে সহজভাবে নেইনি। হামলাকারীরা কোথা থেকে মদদ পাচ্ছে, কারা তাদের অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছে, আমরা এর শেকড়ে পৌঁছাতে চাই।
তিনি আরো বলেন, সব বাহিনীর সমন্বয়ে বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। অনেক তথ্য পেয়েছি। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট, ঈদের দিনে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া, পবিত্র মদিনা শরিফ ও ফ্রান্সের নিস শহরে সন্ত্রাসী হামলায় দেশি-বিদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় কার্যপ্রণালী-বিধির ১৪৭ ধারা অনুযায়ী আওয়ামী নেতা শেখ সেলিম নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর উপরে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতাসহ ২৪ সংসদ সদস্য। আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে পাস হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে গুলশানের জঙ্গি হামলার সব ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আমি নিজেই ওই ভিডিও ফুটেজগুলো দেখেছি। আমরা এ ঘটনাকে সহজভাবে নেইনি। হামলাকারীরা কোথা থেকে মদদ পাচ্ছে, কারা তাদের অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছে- আমরা এর শেকড়ে পৌঁছাতে চাই। জঙ্গিদের মূলোৎপাটন করা হবে।
তিনি বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজান রে্স্টুরেন্টে হামলার পরই আমাদের আশঙ্কা ছিল কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলা হতে পারে। শোলাকিয়ার মূল এলাকা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে সন্ত্রসী হামলা হয়। পুলিশ জীবন বাজি রেখে প্রায় সব জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গি হামলায় নিহত হলে বেহেশত যাবেন, বেহেশতে তারা হুরপরি পাবে। নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্ররা এসব কোথায় পেল, ইসলাম ধর্মের নামে তারা এসব কী করছে? ইসলাম ধর্মে মানুষ হত্যাকে সমর্থন করে না। ইসলাম ধর্ম অত্যন্ত শান্তির ধর্ম।
বুখারি শরিফের হাদিসের তথ্য উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ছাত্রদের বিভ্রান্ত করছে, ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করা হবে। সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে কখনো স্থান দেব না।
সাধারণ আলোচনায় সূচনা বক্তব্যে শেখ সেলিম বলেন, গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার পরপরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশেও তাদের অনেক লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এটা আমার কথা নয়, গোয়েন্দা রিপোর্ট। এই ঘটনার পূর্বে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে ও শেখ হাসিনা সরকারের পতনে বিভিন্ন জঙ্গিদের অর্থায়নে ১৫০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গত ১৭ জুলাই অধিবেশনের শুরুতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট, ঈদের দিনে কিশোরগঞ্চের শোলাকিয়া, পবিত্র মদিনা শরিফ ও ফ্রান্সের নিস শহরে জঙ্গি হামলায় দেশি-বিদেশি নাগরিক নিহত হওয়ায় মহান জাতীয় সংসদে শোক ও তীব্র নিন্দা জানান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মন্তব্যসমূহ