শেরপুর সীমান্তে গ্রেনেড, অস্ত্র-গুলিসহ ২ আদিবাসী গ্রেফতার ও ৩ দিনের রিমান্ডে

ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম- উলফা’র আস্তানা হিসেবে পরিচিত শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্ত থেকে হ্যান্ডগ্রেনেড, অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতার হওয়া সেই ২ আদিবাসীর ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। আজ বুধবার ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনের বিষয়ে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোমিনুল ইসলাম ওই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরা হচ্ছে উপজেলার বড় গজনী এলাকার মৃত নগেন্দ্র সাংমার ছেলে সিষ্টো মারাক (৪০) ও মৃত জ্যাকোব মারাকের ছেলে অনুকূল সাংমা (৪৫)।
শেরপুর ডিবি পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিঠু ওই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ২ ব্যক্তি একটি চক্রের সাথে অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ওই ধরনের তথ্যের কারণেই তারা বেশ কিছুদিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিল। তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে গ্রেনেড ও অস্ত্রের উৎস কোথাকার এবং তারা কি উদ্দেশ্যে সেগুলো তাদের হেফাজতে রেখেছিল তা উদঘাটনসহ জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার করা সম্ভব হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে গ্রেনেড, অস্ত্র-গুলিসহ ওই ২ আদিবাসীকে গ্রেফতারের পূর্বে ২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার পাহাড়ি জনপদের বিভিন্ন এলাকা থেকে দফায় দফায় বড় ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারূদ উদ্ধারের ঘটনা এবং সেগুলো নিয়ে পৃথক পৃথক মামলা হলেও ওইসবের পেছনে কারা জড়িত তার কোন তথ্যই উদঘাটিত হয়নি ওইসব মামলায়। তবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় থেকে সীমান্তের ওইসব এলাকা উলফাদের অবাধ বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হওয়ায় অস্ত্র-গোলাবারুদগুলো তাদেরই লুকিয়ে রাখা বলে প্রথম থেকেই ধারণা এলাকাবাসীসহ অনেক দায়িত্বশীল দপ্তরের। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে উলফা নেতা রঞ্জু চৌধুরী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে শেরপুর সীমান্তে তাদের বিচরণ কমে এলেও সংশ্রবে থাকা বেশ কিছু আদিবাসী যুবক রয়েছে নজরদারীতে।
উল্লেখ্য, রবিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঝিনাইগাতী সীমান্তের বড় গজনী এলাকার উলফা কমান্ডার রঞ্জন চৌধুরীর (বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত) বাড়ির অদূর থেকে একটি তাজা হ্যান্ডগ্রেনেড, একটি পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন ও ৫ রাউন্ড গুলিসহ সিষ্টো মারাক ও অনুকুল সাংমাকে গ্রেফতার করে শেরপুরের ডিবি পুলিশ। পরে ডিবি পুলিশের এসআই সজীব বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করলে মামলার তদন্তভার বর্তায় ডিবি পুলিশের হাতেই।

মন্তব্যসমূহ