মালয়েশিয়ায় স্বল্প পুঁজিতে নিরাপদে ব্যবসা ও স্থায়ীভাবে বসবাস

: আগামী ২০২০ সালের মধ্যে মালয়েশিয়া উন্নত বিশ্বের অন্যতম সদস্য দেশ হবার প্রক্রিয়াতে রয়েছে। এ কারণেই মালেয়শিয়ার সরকার তাদের ব্যবসার বাজার সবার জন্য উন্মুক্ত ও সহজ করে দিয়েছে। পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম খরচে ও নিরাপদে বিনিয়োগ করা যায় দেশটিতে।

নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীদের আস্থার ও বিশ্বস্ততার প্রতীক এখন মালয়েশিয়া। চীন, ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো আমারাও এই সুযোগটি গ্রহণ করতে পারি অতি সহজেই।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির এই দেশটিতে বড় ধরনের বিনিয়োগের পাশাপাশি এখন স্বল্প পুঁজির ব্যবসারও দুয়ার অবারিত বাংলাদেশিদের জন্য। স্বল্প পুঁজিতে প্রায় ৫০ ধরনের আধুনিক ও রুচিসম্মত ব্যবসা করার সুযোগ রয়েছে দেশটিতে।

এই বিষয়ে পদ্ধতিগত ও আইনগত দিক নিয়ে বিস্তারিত জানতে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন চেইন শপ এর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে,ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার খুলে, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করে, ইন্টেরিয়রের কাজ করে, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অফিস স্থাপন, সেলুন, টেইলারিং, কারওয়াশ, রেন্ট-এ-কার এর ব্যবসা খুলে ও পুরনো গাড়ি কেনাবেচা, সাইবার ক্যাফে খুলে, মোবাইল লোড-ফটোকপির দোকান দিয়ে, টেইলারিং শপ খুলে, ফলের দোকান সাজিয়ে, প্রিন্টিং ব্যবসা করে পর্যাপ্ত আয়ের সুযোগ আছে মালয়েশিয়ায়।

এছাড়া কিছুটা বড় পরিসরে জমি লিজ নিয়ে সবজি আবাদ/কৃষি খামার, মৎস্য চাষের মত ব্যবসা করা যায়। CIDB লাইসেন্স করে কনস্ট্রাকশন ও রিনোভেশনের কাজ করা যায় অতি সহজেই। এসবের বাইরে আছে স্বল্প পুঁজির হোম স্টে ব্যবসা। এছাড়া এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট, সফটওয়ার বা আইটি রিলেটেড ব্যবসা করার অবারিত সুযোগ রয়েছে।

হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজেট হোটেল, বুটিক হাউজ, আইসক্রিম বা কফি শপ, জুস কর্নার, বিউটি শপ বা স্পা সেন্টার, বিউটি পার্লার বা ফুলের দোকানের রয়েছে অনেক চাহিদা। ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগের এই ব্যবসাগুলো এখন নিয়ন্ত্রণ করছে মূলত চাইনিজ, ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা। কিন্তু মালয়েশিয়ার বিশাল বাজার এখনো উন্মুক্ত। এই বিপুল চাহিদা আমরা আমাদের জনগোষ্ঠি দ্বারা অতি সহজেই পূরণ করতে পারি।

কেকে, ৭/১১, বারজায়া গ্রুপ, হান্ড্রেড প্লাস ও মাইনিউজ.কম এর মতো মালয়েশীয় চেইন শপের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত ম্যাকডোনাল্ডস ও কেএফসি’র ফ্র্যাঞ্চাইজি বা ব্র্যাঞ্চ পাওয়া যায় মালয়েশিয়ায়। এছাড়া নতুন আরো শতাধিক প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া শুরু করেছে। বৈধ ভিসাধারি যে কেউ যোগাযোগ করলে এদের ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া সমস্যা নয়।

প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই পুরো মালয়েশিয়ায় কয়েক হাজার দোকান বা শাখা আছে। রেমলি নামে যে কিয়স্ক (ক্ষুদ্র দোকান) এখন ভালো ব্যবসা করছে তাদেরও গোটা মালয়েশিয়ায় ২১শ’ শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আরো নতুন নতুন শাখা দিচ্ছে।

ব্যয়ামাগার, ফিজিওথেরাপী, আলট্রাসনোগ্রাফি, প্যাথলজি সেন্টার  দিয়েও মানবিক সেবা একই সঙ্গে ব্যবসা করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে দেশটিতে।

ফেরতযোগ্য জামানত হিসাবে অল্প পরিমাণ টাকা ব্যাংকে রেখে কোম্পানি খুলে এসব চেইন শপ এর ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া যাবে। এরপর নিতে হবে দোকান ভাড়া। মালয়েশিয়াতে দোকান ভাড়া নিতে বাংলাদেশের মতো ২০/২৫ লাখ টাকা জামানত রাখার দরকার হয় না। উপরন্তু দোকান ভাড়া পাওয়া যায় তুলনামূলক কম খরচে ও অতি সহজে।

যেমন, ১৬শ’ বর্গফুট দোকান মাত্র ১,৮০০ থেকে ২,০০০ রিঙ্গিতে ভাড়া পাওয়া যায় কুয়ালালামপুরের যেকোন হার্টপয়েন্টে। এর অর্থ হলো, চলতি মাসের ভাড়া ও দুই মাসের অগ্রীম ভাড়া দিয়ে দোকান পাওয়া যাবে মালয়েশিয়ায়। উপরন্তু অনেক অফিস বা দোকান ডেকোরেশন করাই থাকে, যা সরাসরি ব্যবহার করা যায়।

আর দোকান ডেকোরেশনের খরচ কিছু থাকলেও লাখ লাখ টাকার পণ্য পাওয়া যায় জামানত ছাড়াই। পণ্য বিক্রি করে তারপর টাকা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানীকে। লাভের কমিশনের পুরোটাই থাকবে নিজের কাছে। অনেক কোম্পানি তো প্রয়োজনীয় ফার্নিচার এমনকি এসি, ফ্রিজটাও দিয়ে দেয় ব্যবহার করার জন্য। এভাবে ৫০ হাজার টাকা ডিপোজিট রেখে মাসে ১০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকার পণ্য পাওয়া যায় অনায়াসে।

এছাড়াও মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক কোম্পানির অধীনে বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা করলে পাঁচ বছর পরে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব (পিআর) পাওয়া যায় বেশ সহজেই। ২ বছর পর পর ভিসা নবায়ন করে আজীবন বসবাস করা যায় এবং 5 বছর পর স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়।

ইতিমধ্যে গত কয়েক বছরে বহু বাংলাদেশী স্থায়ী নাগরিকত্ব বা মালয়েশিয়ান Passport পেয়েছে। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করলে পি.আর রিফিউজড হবার সম্ভবনা থাকে না। এই ধরনের কোম্পানীর ক্ষেত্রে বড় সুবিধা হলো- কোনো মালয় নাগরিকের সুপারিশ প্রয়োজন হয় না। এমনকি অন্য

মন্তব্যসমূহ