গৌরীপুর পৌরসভায় অধিকাংশ কাউন্সিলর প্রার্থীই স্কুলের গন্ডি পেরোয়নি ঃ ১৫ জন প্রার্থী স্বশিক্ষিত

সাজ্জাতুল ইসলাম সাজ্জাত, গৌরীপুর প্রতিনিধি: 
‘লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে সে’- এ বাক্যটি মিথ্যা মনে হবে গৌরীপুর পৌরসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীর হলফনামায় উলেস্নখিত শিড়্গাগত যোগ্যতা দেখে। এখানকার পৌরসভা নির্বাচনে এবার সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫৮ জন প্রাথী ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ওইসব ভবিষ্যৎ জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে পৌরসভার উন্নয়নের হাল ধরতে চান। এঁদের মধ্যে অধিকাংশ প্রার্থীই স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেননি। হাতেগোনা কয়েকজন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাশ করেছেন আর ১৫ জন স্বশিক্ষিত। আবার তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন ১ জন এম এ ও ৮ জন বিএ পাশ। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪২ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এই ৫৮ জন প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে ‘স্বশিক্ষিত’ লিখেছেন ১৫ জন। হলফনামা খতিয়ে দেখা গেছে ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩ জন প্রার্থীর মধ্যে মোছাঃ রহিমা স্বশিক্ষিত ও কবিতা আক্তার ৫ম শ্রেণী পাস এবং দিলুয়ারা আক্তার এইচএসসি পাশ। ৪, ৫ ও ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে জ্যোৎস্না রানী দে, মোছাঃ আলেয়া বেগম স্বশিক্ষিত, কোহিনুর বেগম স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন এবং রোকেয়া ৫ম শ্রেণী এবং মিনু চৌধুরী, মোছাঃ সেলিনা, বর্তমান কাউন্সিলর শিউলি চৌধুরী, মোছাঃ সেলিনা খাতুন ৮ম শ্রেণী পাস। ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৫জন প্রার্থীর মধ্যে জেসমিন আক্তার, জ্যোতি রানী সরকার, মোছাঃ মনোয়ারা বেগম স্বশিড়্গিত এবং সালেহা আক্তার ও খোদেজা বেগম ৮ম শ্রেণী পাশ।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩জনের মধ্যে মোঃ কামাল হোসেন স্বশিড়্গিত, দেওয়ান মাসুদর রহমান (সুজন) এইচএসসি, ও মো ঃ আব্দুর রউফ মোসত্মাকিম) এসএসসি পাশ। ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ দেলোয়ার হোসেন, মোস্তফা কামাল এসএসসি, মোঃ নুরুজ্জামান এইচএসসি এবং মোঃ আব্দুল কাদির বিএ পাশ। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মোঃ মাসুদ মিয়া, মোঃ হারুন-অর- রশীদ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিএ পাশ , মোঃ ফাহিম উদ্দির চৌধুরী ৮ম শ্রেণী পাশ এবং মোঃ তারিফ উদ্দিন আকন্দ স্বশিক্ষিত। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৫জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে  মো হাকিম মুন্সী বিএসএস, বোরহান উদ্দিন বিএসসি, মোঃ শামীম হোসন চৌধুরী এইচ্‌এসসি ও মোঃ নুরম্নল ইসলাম ৮ম শ্রেণী পাশ এবং শফিকুল ইসলাম বুটু স্বশিক্ষিত। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৮জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মোঃ শামছুল ইসলাম, মোঃ মুখলেছুর রহমান, মোঃ রুসমত আলী, মোঃ আতাউর রহমান স্বশিক্ষিত। মোঃ জিয়াউর রহমান, এ,কে,এম, রোকরম্নজ্জামান রোকন) এসএসসি পাশ এবং মোঃ শহীদুল ইসলাম (শহীদ) ও মোঃ আবুল হোসেন ৮ম শ্রেণী পাশ। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে কবির খান ও মোঃ হাবিবুর রহমান লিটন স্বশিক্ষিত। মোঃ মজিবুর রহমান দাখিল পাশ, মোঃ মিজানুর রহমান এসএসসি পাশ এবং মোঃ আনোয়ার হোসেন মীর ও মোঃ এমরান ৮ম শ্রেণী পাশ। ৭ নম্বর ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মোঃ নাজিম উদ্দিন এমবিএ (ব্যবস্থাপনা) ও মোঃ মোফাজ্জল হোসেন খান এইচএসসি পাশ। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মোঃ মিজবাহ উদ্দিন আহমেদ ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ, মাসুদুর রহমান এসএসসি মোঃ সাদেকুর রহমান ৮ম শ্রেণী এবং মোঃ সাইফুল ইসলাম বিএসসি পাশ। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে এ,এম আলী আহাম্মদ বিএ, মোঃ নবী নেওয়াজ খান পাঠান আলীম, আরিফুল ইসলাম ভুইয়া ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ এবং মোঃ লাল মিয়া ৮ম শ্রেণী পাশ।
১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার নাজমুল হক কাশেম জানান, পৌরসভার নেতৃত্ব দিতে হলে শিড়্গিত এবং ভাল লোকের প্রয়োজন। সুরর্যবালা পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিড়্গক মোঃ আমজাদ হোসেন খান বলেছেন, সমস্যা হলো, প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটা থাকা উচিত। একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে হলেও তো শিক্ষার দরকার। যেহেতু সেটা নেই, তাই প্রার্থীর অন্য যোগ্যতার পাশাপাশি শিক্ষার বিষয়টিও বিবেচনায় রেখে ভোটারদের ভোট দেওয়া উচিত।
পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ মাসুদ মিয়া (বিএ পাশ) বলেন, পরিকল্পিত পৌর শহর গড়তে শিক্ষিত নেতৃত্বের বিকল্প নেই।

মন্তব্যসমূহ