প্রচলিত পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর জন্য ডিজিটাল পাঠ্যবইও আগামী বছর চালু করা হবে। আর তা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ক্লাসের জন্যও করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রোববার জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) টিকিউআই প্রকল্প আয়োজিত দুদিনব্যাপী এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘২০১৬ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হচ্ছে ডিজিটাল পাঠ্যবই। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রচলিত পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে ‘ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিজিটাল টেক্সট বুক’ চালু করবে সরকার। এরপর পর্যায়ক্রমে তা অন্যান্য ক্লাসের জন্যও করা হবে।’ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, টিকিউআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বনমালী ভৌমিক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র পাল ও নায়েমের মহাপরিচালক অধ্যাপক হামিদুল হক প্রমুখ। ১৭ বছর পর শিক্ষাক্রমকে যুগোপযোগী করার বিষয়টি তুলে ধরে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এভাবেও চলবে না, নিত্যনতুন পরিবর্তনের বিষয়াদিও শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।’ শিক্ষা একটি প্রতিনিয়ত অগ্রসরমান বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বইকে আরও রঙিন ও আকর্ষণীয় করতে হবে। আমরা প্রচলিত পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি সকল ক্লাসে ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিজিটাল বই চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি।’ শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘শিক্ষার মানোন্নয়ন, বোধগম্যতা ও আকর্ষণীয়তা বৃদ্ধি, সহজলভ্যতা সৃষ্টিতে তথ্য-প্রযুক্তির বিকল্প নেই। চলমান বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অনেকখানি বৃদ্ধি হয়েছে এবং আরো হচ্ছে।’ ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক তৈরির কাজ অনেক এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অভিজ্ঞ তথ্য-প্রযুক্তিবিদদের সহায়তায় আমাদের টিচার্স ট্রেনিং কলেজসমূহের অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলীকে দিয়ে ডিজিটাল বই করা হচ্ছে। প্রতিটি বইয়ের কঠিন শব্দ, বাক্য, বিষয় ইত্যাদি সহজভাবে বুঝানোর জন্য শব্দার্থ, ব্যাখ্যা, এনিমেশন, ছবিসমূহ রঙিন করা, প্রয়োজনীয় ভিডিও যুক্ত করাসহ নানাভাবে তুলে ধরা হবে। নতুন এ উদ্যোগের ফলে নতুন প্রজন্মের জন্য প্রযুক্তির নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।’ শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণির সকল বইয়ের ইন্টারএ্যাকটিভ ডিজিটাল বই তৈরি করা হবে। শিক্ষার্থীরা বিষয়সমূহ নিজেরা আরও সহজভাবে বুঝতে পারবে, আগ্রহী শিক্ষার্থীরা অধিকতর জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।’ তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার লেখাপড়াকে শিক্ষার্থীদের কাছে অনেক সহজ, আকর্ষণীয় ও বোধগম্য করে তুলবে বলে এ সময় তিনি মন্তব্য করেন।
মন্তব্যসমূহ