ময়মনসিংহে ক্ষুদে বিজ্ঞানী প্রান্তিক পালের চালক বিহীন বিমান তৈরি

ময়মনসিংহে ক্ষুদে বিজ্ঞানী প্রান্তিক পালের চালক বিহীন বিমান তৈরি
মোঃ মমিনুল ইসলাম

প্রগ্রসিভ মডেল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র প্রান্তিক পাল প্রাপ্য বিভিন্ন উন্নত দেশের সামরিক বাহিনীতে ব্যবহারিত গোয়েন্দা বিমান ড্রোনের আদলে চালক বিহীন বিমান তৈরী করেছে যা দেখলে আশ্চর্য হয়ে যেতে হয়। সাধারন নির্মান সামগ্রী দিয়েই তার নিজস্ব উদ্ভাবনী মেধা খাটিয়ে প্রন্তিক পাল এই চালক বিহীন বিমানটি তৈরী করেছে। এই বিমানটিতে রয়েছে জিপিএস সিস্টেম। যেটি গুগুল ম্যাপ প্রদর্শন করতে পারে ও ইন্টারনেটে গুগুল ম্যাপে যে সমস্থ জায়গা গুলোর উপর দিয়ে ঘুড়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয় প্রান্তিক পালের নির্মিত ড্রোন বিমানটি সয়ংক্রিয় ভাবে ঐ নির্দেশিত স্থান গুলি ঘুড়ে আসতে পারে। এটিকে রিমোভ কন্টোলের মাধ্যমে কন্টোল করা হয়। আরো আশ্চার্যের ব্যাপার এই যে এই চালক বিহীন ড্রোন বিমানটিতে একটি সয়ংক্রিয় ক্যামেরা রয়েছে। যা দিয়ে বিমানটি যে সমস্থ জায়গার উপর দিয়ে উড়ে যায় সে সব জায়গায় অবস্থিত বিভিন্ন স্থাপনা ও দৃশ্যমান বস্তুর ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করে নিয়ে আসে। যা পরবর্তীতে দেখা সম্ভব হয়।
বর্তমানে পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশের সেনা বাহিনী সীমান্ত রক্ষা ও শত্র“ দেশের অভ্যন্তরে পর্যবেক্ষনের কাজ করে থাকে এ ধরনের চালক বিহীন বিমানের মাধ্যমে। মানুষ যে সমস্থ স্থানে যেতে পারে না, সেই সমস্থ স্থানের উপর দিয়েও এটি চলাচল করতে পারে। উন্নত দেশে এমনকি আমাদের পার্শবর্তীদেশ ভারত ও পাকিস্থানেও পুলিশী ও গোয়েন্দা নজরধারীতে এর ব্যবহার রয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র তাদের দেশের নিরাপত্তার কাজে এ ধরনের চালক বিহীন বিমান ব্যবহার করে শত্র“দেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্থানের ছবি ও ভিডিও ধারন করে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে। প্রান্তিক পালের এ ধরনের উদ্ভাবন তাই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ছোট বেলা থেকেই প্রান্তিকের স্বপ্ন ছিল সে এমন কিছু বানাবে যা নিজে নিজেই উড়তে পারে। প্রথম দিকে সে সামান্য মটর আর পাখা দিয়ে কিছু একটা উড়াতে চেষ্টা করতো। আস্তে আস্তে একদিন সে রিমোর্ট কন্টোল বিমান তৈরী করল যা অনেকটা জায়গা জুড়ে উড়তে পারে। তার সেই প্রচেষ্টার সফল বাস্তবায়ন হলো আজকের এই চালক বিহীন ড্রোন বিমানটি। এসব কথা জানালেন প্রান্তিকের বড় ভাই নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র প্রত্যয় পাল। প্রান্তিকের বাবা পিযুষ কান্তি কাল পাটগুদাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার মাতা শুক্লা রানী পাল পাটগুদাম বালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা। গর্বিত এই সন্তানের মাতা ও পিতা মনে করেন সরকারী ভাবে যদি প্রান্তি সহযোগিতা পায় তা হলে প্রান্তিক এক সময় আরো বড় অনেক কিছু করে দেখাতে পারবে। যা দেশ ও জাতীর জন্য কল্যনকর হবে।
২০১৫ সালে ময়মনসিংহের মেয়র আলহাজ্ব মো: ইকরামুল হক টিটু‘র অনুপ্রেরনায় ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত ইয়ং বাংলা প্রোগ্রামে প্রান্তিক অংশ গ্রহন করে ও প্রসংশা পত্র লাভ করে। ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ বিজ্ঞান মেলায় অংশ গ্রহন করে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকায় ক্ষোদে বিজ্ঞানীদের আসরে অংশ গ্রহন করে পুরস্কার লাভ করে ও ড. জাফর ইকবালের কাছ থেকে প্রসংশাপত্র পায়। প্রান্তিকের এই ড্রোন প্রজেক্টের সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পুর্বে প্রকাশিত হয়েছে। প্রান্তিক ড্রোনকে এমন ভাবে তৈরী করতে চায় এটি যেন ভবিষতে দেশের কাজে ও মানুষের উপকারে আসে। প্রান্তিকের দাবী তার এ ড্রোনটি অল্প ব্যায়ে তৈরী করা সম্ভব। যা দেশের নিরাপত্তার কাজে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।
প্রান্তিক যখন জেলা স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় তার উদ্ভাবিত ড্রোনটির কার্যকারিতা দেখাচ্ছিল তখন উপস্থিত ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মো: ইকরামুল হক টিটু কথা প্রসংঙ্গে বলেন, প্রান্তিক পালের মত কোন প্রতিভাবানের যে কোন কাজের সহযোগিতা করা আমার নৈতিক দ্বায়িত্ব বলে আমি মনে করি। তাই প্রান্তিক যদি কখনও আমার কাছে সহযোগিতা চায়, আমি অবশ্যই তা করবো।

মন্তব্যসমূহ