
২০০৯ সালের এই দিনে রাজধানীর পিলখানা বিডিআর সদর দফতরের ভেতরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারান।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একসাথে এত সেনা কর্মকর্তার হত্যাযজ্ঞের নজির আর নেই।পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে।পিলখানা থেকে আবিষ্কৃত হয় গণকবর।আর সেই গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ।
সেই পিলখানা ট্রাজেডির আজ সাত বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ।সাত বছর আগের এই দিন সকাল ৯ টা ৫ মিনিটে রাইফেলস-বিডিআর-এর বিপথগামী কতিপয় সদস্য দাবি দাওয়ার নামে পরিকল্পিতভাবে পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায়। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি এই দুই দিনে তারা ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাসহ আরো একজন সৈনিক,দুইজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী,৯ জন বিডিআর সদস্য ও ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং তাদের পরিবারকে জিম্মি করে ফেলে।
চারটি প্রবেশ গেটেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশেপাশের এলাকায় গুলি ছুঁড়তে থাকে। জন্ম নেয় এক বিভিষিকাময় কাণ্ডের।শুরু হয় লুটপাট,ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের।
নির্মম,নৃশংস এ হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরতার পর প্রথমে লালবাগ থানায় ও পরে নিউমার্কেট থানায় সদর ব্যাটালিয়নের ডিএডি তৌহিদুল আলমসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় কয়েক হাজার বিডিআর সদস্যকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে আসামী করা হয়। বিডিআরকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়।বিডিআরের নাম,পোশাক,লোগো,সাংগাঠনিক কাঠামো,পদন্নোতি ইত্যাদি ব্যাপার পূনর্গঠন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের(বিজিবি) জন্ম হয়।
পরিবর্তন করা হয় বিডিআর বিদ্রোহের আইন।
বর্ডার গার্ড আইনে সর্বোচ্চ সাজা রাখা হয় মৃত্যুদণ্ড।
বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় বিশেষ আদালতে ১৫২ জনকে ফাঁসি,১৬১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৬৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে।২৭১ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ পিলখানা হত্যাকাণ্ড এর শহীদ ব্যক্তিবর্গের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে,তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
বাংলাদেশ প্রজন্ম লীগের পক্ষ থেকে সকল শহীদ সেনা সদস্যদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা।
বিজিবি আমাদের দেশের বর্ডারে সুরক্ষা দেয়,জীবন দিয়ে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
তাই তাদের পরিবারদের সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের।তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে,সেই সাথে তাদের নিজেদের কর্তব্য নিয়ে সচেতন থাকতে হবে।
মন্তব্যসমূহ