হায়রে প্রেম প্রেমিকের মৃত্যুর খবর শুনে সাথে সাথেই প্রেমিকার আত্মহত্যা

girls
রাজশাহী প্রতিনিধি  : রাজশাহী নগরীতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র মোনায়েম হোসেন তুর্য (১৫)র মৃত্যুর খবর শুনে আত্মহত্যা করেছে  তার প্রেমিকা তামান্না আক্তার কেয়া (১৫)। শুক্রবার দুপুরের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাদের।
তূর্য ও কেয়া হাসিখুশি দুই কিশোর-কিশোরী । দুজনের বাড়ি পাশাপাশি । একই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়তো দুজনেই। এক সঙ্গেই স্কুলে যাওয়া, প্রাইভেট পড়া ও খেলাধুলার সুবাদে ওদের বন্ধুত্ব একসময়  গড়িয়েছিল প্রেমে।পরিবারের সদস্যরাও মেনে নিয়েছিলো। কথা ছিলো পড়াশোনা শেষ করে ঘর বাধবে। কিন্তু আকস্মিক বিপর্যয়। কেয়ার জীবনে সব স্বপ্ন একনিমিষেই মুছে গেলো শুক্রবার দুপুরে।
আবেগি কেয়া সিদ্ধান্ত নিলো কি হবে বেঁচে? যেখানে তার ভালোবাসার মানুষটি আর নেই। মৃত্যুকেও যেন তারা বেছে নিল এক সঙ্গেই। সড়ক দুর্ঘটনায় তূর্যের মৃত্যুর খবরে শোক সইতে না পেরে আত্মহননেই প্রাণ দিল কিশোরী কেয়া।
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রেমিকের মৃত্যুর সংবাদ শুনে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে কেয়া । এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। হাজার হাজার মানুষ ছুটছেন এই দুজনের লাশ দেখতে।
শুক্রবার বিকেলে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে এ জুটির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর কিছুক্ষণ পরপরই নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় কেয়া। বিষয়টি টের পেয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকেও নেয়া হয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত তুর্যের চাচা আল আমিন বিদ্যুৎ সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, বেলা ১২ টার দিকে নগরীর বিনোদপুর এলাকার মণ্ডলের মোড়ে ইটবাহী একটি ট্রলার তুর্যকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে বিনোদপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি ইটবাহী ট্রাক তূর্যকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে ঘণ্টা খানেক পরে মারা যায় তূর্য। তার লাশ বাড়িতে আনার খবর পেয়ে কিশোরী কেয়া সবার অগোচরে নিজ ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মতিহার থানার ওসি (তদন্ত) অশোক চৌহান সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বাড়ির সামনে দিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ছাদ থেকে দেখে ফেলে কেয়া। সইতে না পেরে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।’
বিষয়টি স্বীকার করে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির সময়ের কণ্ঠস্বরকে  বলেন, দুর্ঘটনার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন নিহত তুর্যের পরিবার। আর আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে সন্ধ্যায় স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন বলে জানান ওসি।

মন্তব্যসমূহ