কিশোরকে মারধরের ভিডিও নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়


মারধরের দৃশ্য

মেয়ে বন্ধুকে ঘিরে এক কিশোর মারধর করেছে স্কুলের আরেক কিশোরকে। একজন সে দৃশ্য ধারণ করেছে। যে মারছে সে ভিডিও ধারণকারীকে নির্দেশনা দিচ্ছে আরেকটু ক্লোজ ভিডিও করার। আর ভিডিও ধারণকারী তাকে আরেকটু আস্তে মারতে বলছে। দশ মিনিটের পুরো ভিডিওতেই দেখা যায় একজন আরেকজনকে মারছে, গালি দিচ্ছে, নানা অভিযোগ করছে। আর যে মার খাচ্ছে সে শুধু বোঝাতে চাইছে যে সে এমন কিছু করেনি, কোনও ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।

ফেসবুকে এই ভিডিও প্রকাশ করে ফেসবুক কুয়ারা- ‘ছেলে vs মেয়ে’ নামের একটি পেজ থেকে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে- ধানমন্ডি লেকের পাড়ে এই ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আশপাশ দিয়ে মানুষের আনাগোনা আছে। কিন্তু অভিভাবকস্থানীয় কেউই ঘটনা সুরাহায় এগিয়ে আসেনি।
অপরাধ বিশ্লেষক জিয়া রহমান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিরোধটা জরুরি। আমাদের সমাজে গুরুজনদের সামনে আমরা অনেক কিছু করতাম না। এতে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে থাকতো। এখন সেই বিবেচনা যেমন নেই, অভিভাবকরাও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন না।’

জানা গেছে, মারধর করা ওই কিশোরের নাম জুনায়েদ। তার সঙ্গে একজনের কথপোকথন ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে জুনায়েদ বলছে, সে রাগের মাথায় ভুল করে ফেলেছে এবং তার বাড়ি গেণ্ডারিয়া এলাকায়। অডিওর আরেকপ্রান্তের ব্যক্তির পরিচয় না পাওয়া গেলেও তিনি ধানমন্ডি এলাকার সেটা জানা যায়। তিনি জুনায়েদকে ক্ষমা চেয়ে (অ্যাপোলজি) ভিডিও আপ করতে বলেন। এরপর সোমবার একটি ‘অ্যাপোলজি’ ভিডিও আপ করা হয়, যেখানে জুনায়েদ শিকার করে, এভাবে মারা ঠিক হয় নাই। তবে সেই ছেলেটি জুনায়েদের সঙ্গে যে কাজ করেছে সেটাও ঠিক করে নাই।

জুনায়েদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নিয়ে ইতোমধ্যে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে যেখানে জুনায়েদকে কীভাবে মারা যায় তার পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানে বারবারই তাদের কমন বন্ধু মেয়েটির নামও আসছে। সেই ইভেন্ট পেজে গিয়ে মনোয়ারুল হক নামের একজন লিখেছেন, ‘একটা অসুস্থতা থামাতে নিজেরাও অসুস্থতা শুরু করলে বিষয়টা শেষে অসুস্থতাই থেকে গেল। জনৈক বালিকাকে নিয়ে এদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি দিয়ে এই অসুস্থতার শুরু। জুনায়েদের বিচার হোক, তবে ওকে মেরে ভিডিও করে আপলোড করার পক্ষে থাকলে আপনিও সাইবার ক্রাইম করবেন। আর মেয়েটার নানান রকম ছবি খুঁজে খুঁজে যারা পোস্ট করছেন, তারাও সাইবার ক্রাইম করছেন। এটা কোনওভাবেই কাম্য না।’
এই পাল্টাপাল্টি বিষয় বড় কোনও আকার ধারণ করতে পারে কি না, জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আজম মিয়া বিকেল চারটায় বলেন, ‘বিষয়টি সম্প্রতি আমাদের নলেজে এসেছে। যে ছেলেটি আক্রান্ত হয়েছে, সে থানায় আসবে এখন। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।’

মন্তব্যসমূহ