মাদকের করাল গ্রাসে বে- সামাল মুন্সীগঞ্জের যুব সমাজ

images


এম.এম.রহমান,মুন্সীগঞ্জ:  ডাক নাম ফেন্সি, ফান্টু, ৬ ইঞ্চি যাই হোক না কেন পুরো নাম ফেন্সিডিল । আরেক নেশার গুটি, আড়াই, তিন ,আসল নাম ইয়াবা । আইনের চোখে মরন নেশা হলেও মাদকসেবীদের কাছে যেন ফিলিংসটাই অন্যরকম । তাই তো হাজারও যুবক এ মরণনেশা ফেন্সির প্রেমে দিশেহারা হয়ে পড়েছে । নদী মাতৃক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভুমি স্বপ্নের শহর মুন্সীগঞ্জ এখন মাদকের শহরে পরিনত হতে চলছে । মুন্সীগঞ্জ মাদকের উল্লেখযোগ্য স্পটগুলো হচ্ছে, মুন্সীগঞ্জ শহরের রনছ, পারুলপাড়া, দেওভোগ, নয়াগাঁও, পাঁচ ঘড়িয়াকান্দি, সরকারী হরগঙ্গা কলেজের পূর্ব দিকের কাঁচা রাস্তা , দক্ষিন ইসলামপুর , যোগনীঘাট ,বজ্রযোগিনীসহ আরো কয়েকটি অঞ্চল । সদর উপজেলার সিপাহিপাড়া, রামপাল,হাতিমারা, সুখবাসপুর, ধলাগাঁও বাজার, দিঘিরপাড়, মুক্তারপুর , বিসিকমাঠ, বিনোদপুর, মিরকাদিম , রিকাবীবাজার সহ অনেক স্পটে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করতে দেখা যায় । এসব স্পট থেকে সূলভমূল্যে মাদকাশক্তরা পাচ্ছে তাদের কাংখিত সোনার হরিন । বিভিন্ন শ্রেনী পেশার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে । এর মধ্যে পেশাজীবী কিংবা সচ্ছলদের মাঝে জনপ্রিয় মাদক ফেন্সিডিল ।
আর স্বল্প আয়ের মাদকসেবীরা সেবন করছে , গাজা, মদ, ইয়াবাসহ নানা ধরনের নেশা জাতীয় ট্যাবলেট । তবে ফেন্সিডিল সেবীরাও তাদের রাজকীয় অনুভূতি দীর্ঘায়িত করতে ফেন্সির পাশাপাশি গাজাও সেবন করে। জেলাটি নদীমাতৃক হওয়ায় বানের জোয়ারের মতো মাদক ঢুকে পড়ছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে সেখান থেকে বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে মাদক। পাশাপাশি হেরোইন ও ভারতীয় নেশা জাতীয় ইনজেকশনের ব্যবহার তো রয়েছেই । পুলিশ প্রশাসন একের পর এক মাদক বিরোধী র‌্যালী, মিটিং, বিভিন্ন এলাকায় কমিনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে এলাকার সচেতন নাগরিকদের নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে তবুও রোধ হচ্ছেনা মরণব্যধী মাদক । মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন বোর্ড ডিবি কিংবা পুলিশ প্রশাসন নিয়োমিত অভিযান চালালেও তা মাদক নিয়ন্ত্রনের জন্য যথেষ্ট নয় এমনটাই ধারনা সচেতন মহলের । নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাশী জানান, অভিযানে চিহ্নিত মাদক বিক্রেতারা ধরা পড়ছেনা । আর ধরা পড়লেও অল্প দিনে জামিনে বের হয়ে ফিরে যাচ্ছে সেই আগের পেশায় ।
এলাকার মাদক বিক্রেতাদের মধ্যে অনেকেই পরিচিত কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতে চায়না অনেকেই । মাদক বিক্রেতারা মাদক পরিবহনের বাহন হিসাবে কোমলমতী স্কুল পড়–য়া শিশুদের ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে । মাদক ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে । মাদকের নীল দংশনে অনেক পরিবার হারাচ্ছে তাদের আদরের সন্তানকে । কেউ বা পঙ্গুর মত জীবন যাপন করছে । কেউ জমিজমা , সম্পদ হারিয়ে পথে বসেছে, কারও বা ভাংছে সংসার । মাদক নির্মূল করতে দ্রুত মাঠে নামবে প্রশাসন , আটক করবে চিহ্নিত সব মাদক ব্যবসায়ীদের এমনটাই দাবী মুন্সীগঞ্জবাসীর।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউনুচ আলীর সাথে আলাপকালে তিনি চমক নিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে অনেক মাদক বিক্রেতাদের আটক করে আইনের আওতায় এনেছি । যারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাহিরে আছে তাদেরকেও অচিরেই আইনের আওতায় আনা হবে । মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে ।

মন্তব্যসমূহ