৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ক্রিকেটার আশরাফুল

ashraful


মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে বাইশ গজে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ‘আমি জিতলে জিতে যায় মা’-তামিম ইকবালের এই বিজ্ঞাপনের লাইনটির মতো নিজেই বলেছেন, ‘এটা খুবই সত্যি যে সন্তান জিতলে জিতে যায় মা।’সব ধরনের ক্রিকেট থেকে আশরাফুলের নিষেধাজ্ঞা উঠছে ১৮ আগস্ট। তার আগে থেকে নিজেকে প্রস্তুত করতে অনুশীলনে ফিরছেন। ফেসবুকে মায়ের অবদানর কথা স্মরণ করে লিখেছেন, ‘যতবার ইনজুরিতে পড়েছি, যতবার ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরার লড়াই করেছি ঠিক ততবার আমার আম্মারও লড়াই করতে হয়েছে। ইনজুরিতে পড়লে ভীষণ পরিচর্যার দরকার হয়। আম্মা প্রতিবার সেটা দারুণ যতেœর সাথে করেন। এমন অনেক ইনজুরির সময় গেছে যখন ৩ ঘণ্টা পরপর ওষুধ খেতে হয়েছে।’
‘রাতে আমি হয়ত নাক ডেকে ঘুমিয়েছি, আম্মা সারা রাত জেগে থেকেছেন আমাকে ঘুম থেকে ডেকে ওষুধ খাওয়ানোর জন্য। একবার কুঁচকির ইনজুরিতে পড়লাম। কুচকির মত স্পর্শকাতর জায়গায় ওষুধ মালিস করতে হত। নিজের হাতে সেটা ভালোভাবে সম্ভব নয়। তবু রুমের দরজা লাগিয়ে বা বাথরুমে গিয়ে একা কাজটা করতাম। লজ্জায় কাউকে বলতে পারি না কুচকিতে ওষুধ লাগিয়ে দাও। আম্মা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ভীষণ বকা দিল। বললেন, ‘আরে বোকা আমি তোর মা না? আমার কাছে কিসের লজ্জা? তুই যতই বড় হোস না কেন আমার কাছে তো ছোট্ট বাচ্চাই….’
তিনি স্ট্যাটাসে আরো লেখেন, ‘এরপর প্রতিবার কুচকিতে তিনি ওষুধ লাগিয়ে দিতেন। আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়ার পর মা-ই ঠিক সময়ে ওষুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে সব করেছে। অর্চি ওর বাবার বাসায় ছিল পরীক্ষার জন্য। আজ সুস্থ হয়ে আবার অনুশীলনের উদ্দেশ্যে প্রাইভেটকারে উঠলাম। আম্মা গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। ইনজুরিতে পড়ার পর এতদিন তার মুখে হাসি দেখি নাই। প্রাইভেটকারে ওঠার পর আম্মাকে দেখলাম হাসছেন। এরপর বললেন, ‘আর ইনজুরিতে পড়িস না বাবা। আল্লাহ তোকে রক্ষা করুক’। 
ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিয়েছে। এফ এম রেডিও শুনতে শুনতে অনুশীলনে যাচ্ছিলাম। অনেকদিন পর মাঠে অনুশীলন করতে যাচ্ছি। ভীষণ ভালো লাগছিল। আর ইনজুরিকে পরাজিত করায় আম্মার মুখের হাসি মিষ্টি সকালটাকে আরো মিষ্টি করে দিল। আম্মার সেই হাসির একটাই অর্থ- ‘তুই জিতলে জিতে যাই আমি…..’
বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। পরে এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। সে পরিপ্রেক্ষিতে তার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমানো হয়। ৮ বছরের স্থানে ৫ বছর করা হয় তার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। কিন্তু তার মূল স্থগিতাদেশ দুই বছরের। সে অনুসারে আশরাফুল তিন বছর পরই ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট শেষ হবে তার নিষেধাজ্ঞা।

মন্তব্যসমূহ