ত্রিশালের অপহৃত ইউপি সদস্য ময়মনসিংহে উদ্ধার, নারীসহ আটক ৩




এইচ এম মোমিন তালুকদার  ষ্টাফ রিপোর্টার: ময়মনসিংহে অপহরনের শিকার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা। মঙ্গলবার গভীর রাতে শহরের মাসকান্দা আমিরাবাড়ী হাউজিং এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। মাসকান্দা আমিরাবাদে সফল অভিযান পরিচালনা করেন গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি এসআই মফিজুল ইসলাম-এএসআই শামীম হোসেন


জানা যায়, গত ৩১/০৩/২০১৬ ইং তারিখে ১৫ (পনের) লক্ষ টাকাসহ ত্রিশাল থানার ১নং ধানীখোলা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শামছুদ্দিন দুলালকে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা কৌশলে অপহরণ করে ২০(বিশ) লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। এ সংক্রামেত্ম দুলাল মেম্বারের জামাতা মোঃ হামিদুল ইসলাম অভিযোগ করিলে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জনাব হারুন-অর-রশিদ এর নির্দেশে ডিবি’র এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে এসআই মনিরম্নজ্জামান, এএসআই শামীম হোসেন ও সঙ্গীয় ফোর্স বাতেনসহ গতকাল রাত ২.৩০ মিনিট সময় মাসকান্দা আমিরাবাদ আবাসিকে ডাঃ নাসিমের বাসায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীদের আটক করেন।

আটককৃতরা হল ১। আঃ রাজ্জাক নান্নু ,পিতা- মৃত একরাম আলী, সাং- পাপড়াইল সরদারবাড়ী, থানা- ভেদেরগঞ্জ, জেলা- শরীয়তপুর বর্তমানে- চাঁদ মহল, আব্দুল মালেক শেখ, ২৪ নং মসজিদ রোড, মাতুয়াইল দক্ষিনপাড়া খানবাড়ী, থানা-যাত্রাবাড়ী, ডিএমপি, ঢাকা ২। মোঃ মফিজুল ইসলাম হৃদয় (২৬), পিতা- সাহেব আলী সরদার, সাং- ব্রহ্মকাঠি, থানা- কেশবপুর, জেলা- যশোর, বর্তমানে- নবীগঞ্জ, থানা-বন্দর, জেলা- নারায়নগঞ্জ ৩। মোছাঃ আলেয়া বেগম শিউলী (৩৫), স্বামী- হুমায়ুন কবীর লিটন লিটন মোলস্ন্যা, সাং-নবীগঞ্জ, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়নগঞ্জ। গ্রেফতারের সময় তাদের থেকে ৩(তিন) লক্ষ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম জানান, ৩১ মার্চ ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দুলালকে অপহরণ করা হয়। পরে তার পরিবারের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণও দেয় দুলালের পরিবার। কিন্তু বাকি টাকার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে ফোন করে অপহৃতের পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল।

সূত্র জানাযায়, অপহরণ চক্র বেশ কিছুদিন ধরে একাজ করে আসছে। এরা একেক সময় একেক রুপ নিয়ে অপহরণ করে আসছে। এক সময় ইরানি মেয়ে সাজে,অন্য সময় বিদেশী নাগরিক। তার মুল পেশা হলো দেহ ব্যবসা। এই দেহ ব্যবসা দিয়ে সে বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমিল করতো পুরুষদের। নিজের সংঙ্গ নানা রকম অন্তরঙ্গ ছবি তুলে ব্ল্যকমিল করা একটু ধনী হলেই অপহরণ করে টাকা নেওয়া । এদের ছদ্দনাম রয়েছে অনেক। এদের বিভিন্ন জেলায় নেটওয়াক আছে বলে জানাযায়। এক জেলায় তারা বেশিদিন থাকেনা বলে জানাযায়।

ডিবি’র অফিসার ইন-চার্জ ইমারত হোসেন গাজী জানান গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাহাদের সহযোগী আসামী হুমায়ুন কবীর লিটন , মেহেদী হাসান , মোশারফ হোসেন , আবুল কাশেম অজ্ঞাত রয়েছে।

চক্রটি ১৭/০৩/২০১৬ ইং তারিখে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানাধীন মাসকান্দা আমিরাবাদ আবাসিকে ডাঃ নাসিমের বাসার ৩য় তলার ১টি ফস্ন্যাট ১০ (দশ) হাজার টাকা ভাড়াচুক্তিতে উঠে। পরে তারা ত্রিশাল থানাধীন ধানীখোলা বাজারে গিয়ে ভিকটিম দুলাল মেম্বারকে বিশব ব্যাংকের কম্পিউটার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা ক্রয়ের কথা বলে তাকে দাওয়াত দেয়। পরে হুমায়ুন কবীর উর্দু ভাষায় কথা বলে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে কম্পিউটার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট করার জন্য ১৫(পনের) লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করতে বলে। তাদের প্রলোভনে পরে দুলাল মেম্বার গত ৩১/০৩/২০১৬ তারিখে নগদ ১৫(পনের) লক্ষ টাকা নিয়া মাসকান্দা উক্ত বাসায় গেলে আসামীরা ১৫(পনের) লক্ষ টাকা নিয়া নেয় এবং আটকে রাখে। পরে তার মুক্তিপন বাবদ আরো ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে।

পুলিশ সুত্রে আরও জানা যায়, এ ঘটনায় মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন এবং জড়িত অন্যান্য আসামী গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।

মন্তব্যসমূহ