ভারত কাঁপাচ্ছেন দুই বাংলাদেশি

ভারত কাঁপাচ্ছেন দুই বাংলাদেশি
প্রতিটি ম্যাচের আগের দিন ভারত থেকে মাশরাফিকে ফোন করেন মুস্তাফিজ। প্রিয় অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলে আত্মবিশ্বাসটাকে ঝালাই করে নেন। এরপর মাঠে নেমে ‘রহস্যময়’ কাটার ও ইয়র্কারে নাভিশ্বাস করে তোলেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের। মুস্তাফিজুর রহমান,  বয়স মাত্র ২০। অথচ আইপিএলের সবচেয়ে আলোচিত তারকা ক্রিকেটার। খেলছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে। অথচ রান পাচ্ছিলেন না সাকিব আল হাসান। পাচ্ছিলেন না উইকেটও। এতে চিড় ধরেছিল আত্মবিশ্বাসে। অথচ কলকাতা নাইট রাইডার্স শিরোপা রেসে ছুটছে অন্য দলগুলোর সঙ্গে। উপায়ান্তর না দেখে দুই দিনের ছুটি নিয়ে উড়ে আসেন ঢাকায় এবং সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে কাজ করেন কোচ সালাউদ্দিনের সঙ্গে। সাফল্য পাওয়ার টিপস নিয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব ফিরেই বাজিমাত করেন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে। আইপিএলে খেলছেন বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইল, এডি ডি ভিলিয়ার্স, ডুইন ব্রাভোদের মতো তারকা ক্রিকেটাররা। কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষে দুই অস্ট্রেলিয়ান টম মুডি ও ডেভিড ওয়ার্নারের প্রিয় ‘ফিজ’ মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের সঙ্গে ভারত মাতাচ্ছেন সাকিবও। দুজনই ব্যাট ও বলে দলের সাফল্যে অবদান রাখছেন শতভাগ। দুজনের পারফরম্যান্সে মজেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও কলকাতা নাইট রাইডার্সসহ গোটা ভারত।
সাকিব আইপিএলে খেলছেন চার বছর ধরে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে ব্যাট ও বল হাতে আলো ছড়াচ্ছেন প্রতি বছর। এবার প্রথম খেলছেন মুস্তাফিজ। প্রথমবারেই আলোর বিচ্ছুরণ ছড়াচ্ছেন। প্রতিভার দ্যুতি ছড়িয়ে আলোকিত করেন আইপিএলকে। ১৬ এপ্রিল অভিষেকের পর থেকে একই ধারাবাহিকতায় পারফরম্যান্স করে যাওয়া মুস্তাফিজ এখন ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আরাধ্য নাম। শুধু আইপিএলের দলগুলো নয়, বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক লিগ বিগ ব্যাসের দলগুলোও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মুস্তাফিজকে নিতে। দলগুলো একটি অলিখিত প্রতিযোগিতায়ও মেতে উঠেছে। হায়দরাবাদের পক্ষে ৯ ম্যাচে ১৫.৬১ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ১৩টি। এই মুহূর্তে উইকেট শিকারে পিছিয়ে আছেন আন্দ্রে রাসেল, শেন ওয়াটসন ও ম্যাকগ্লানের চেয়ে। ১৪টি করে উইকেট নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন এই তিনজন। ১৩ উইকেট নিয়ে পরের সারিতে থাকা মুস্তাফিজ আইপিএলে নিজের সেরা বোলিং করেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে (৩/১৬)। আইপিএলের চলতি আসরের সেরা মিতব্যয়ী বোলিংটাও মুস্তাফিজের। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে তার স্পেল ছিল ৪-১-৯-২। আসরে এখন পর্যন্ত তার বোলিং স্ট্রাইক রেট ওভারপ্রতি ৬.১৫। ৯ ম্যাচে মুস্তাফিজের পারফরম্যান্স এখন ৩৩ ওভার বোলিং করে মেডেন পেয়েছেন মাত্র একটি এবং রান দিয়েছেন ২০৩। মুস্তাফিজের মতো না হলেও অন্য কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই সাকিব। কলকাতার পক্ষে প্রথম পাঁচ ম্যাচে বড্ড ম্যাড়ম্যাড়ে সাকিব উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে। ২৪ রানে ৪ উইকেটের পতনের পর ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেন ৬৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। ৪৯ বলের অপরাজিত ইনিংসটিতে চারটি ছক্কা ছাড়াও ছিল চারটি চার। আসরে ৬ ম্যাচে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছে ৮৬ রান এবং উইকেট ৩টি।
আইপিএলে সাকিব, মুস্তাফিজ ছাড়াও খেলেছেন আবদুর রাজ্জাক রাজ, মোহাম্মদ আশরাফুল, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তামিম ইকবাল। সাকিব এখন খেলছেন। কিন্তু কোনো ক্রিকেটারই মুস্তাফিজের মতো বাজিমাত করতে পারেননি। মুস্তাফিজ বন্দনায় গোটা ভারত এতটাই মুগ্ধ যে, সানরাইজার্সের সতীর্থরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বাংলা শিখতে।
f

মন্তব্যসমূহ