এর আগে নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদেই একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছিল। ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা মেহমুদুর রশিদের আনা ওই নিন্দা প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানের প্রতি ভালোবাসার কারণেই বাংলাদেশে জামায়াত নেতাদের মৃত্যুদ- দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে তুলে ধরতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল ওই প্রস্তাবে।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা করে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর প্রধান সিরাজ-উল হক সে সময় বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভারত সরকারের নির্দেশনায়’ কাজ করছেন। নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টেও একটি প্রস্তাব পাস হয়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে সে সময় বলা হয়, পাকিস্তানের সংবিধান সমুন্নত রাখাই নিজামীর একমাত্র অপরাধ।
নিজামীর আগে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মো. কামরুজ্জামানের মৃত্যুদ- কার্যকরের সময়ও একই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের এই প্রতিক্রিয়াকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বিবেচনা করে এ বিষয়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করা হয় ঢাকার পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত ১০৭১ সালে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে গত ১১ মে জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামীর মৃত্যুদ- কার্যকর হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজামী ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি। সেই সূত্রে তিনি আল বদর বাহিনীরও নেতৃত্ব দেন। ওই বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা দেয় এবং ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটায়। যুদ্ধের শেষভাগে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবী হত্যার নকশা বাস্তবায়ন করা হয় আল-বদর বাহিনীর মাধ্যমেই। আর সেই হত্যাকা-ের পরিকল্পনা, নির্দেশদাতা হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হন নিজামী।
মন্তব্যসমূহ