সানি সূত্রধর: ভৈরবে ৫ বছরের এক শিশু ধর্ষণের অভিযোগে লম্পট সৎ পিতা লোকমান হোসেন (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শহরের দূর্জয় মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শিশুটি ভৈরব পৌর শহরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী। ধর্ষণের এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকায়। পরে শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় মা সুলতানা বেগম প্রতিবেশীদের সহায়তায় উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। লম্পট ধর্ষক লোকমান হোসেন (৪০) শিশুর সৎ পিতা বলে জানায় মা সুলতানা বেগম। এ ঘটনায় মা সুলতানা বেগম ওই রাতেই বাদী হয়ে পিতা লোকমান হোসেনকে একমাত্র আসামী করে ভৈরব থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ও শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৬ বছর আগে সুলতানা বেগমের বিয়ে হয় গোলাপ মিয়া নামে এক ব্যক্তির সাথে। বিয়ের পর ওই শিশুর জন্ম হয়। পরে গোলাপ মিয়ার সাথে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে সুলতানা বেগম প্রায় ৩ বছর আগে আশুগঞ্জের খড়িয়ালা গ্রামের পরিবহন ব্যবসায়ী লোকমান মিয়ার সাথে ২য় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর থেকে শিশুটি সৎ পিতার আশ্রয়ে থাকতো। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শিশুটির মা বাসায় তার মামীর কাছে রেখে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির কাজে অন্যত্র চলে যায়। এদিকে, মামীও তার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে মাকে দেখতে চলে যান। এ সময় শিশুটি বাসায় একা তার সৎ পিতার কাছে থাকে। এ সুবাদে লম্পট সৎ পিতা লোকমান মিয়া শিশুটিকে ফলের জুস খাইয়ে ফুসলিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর শিশুটির রক্ত ক্ষরণ হলে সে শিশুটিকে কৌশলে গোসল করান এবং পরে বাসা একা ফেলে পালিয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে মা সুলতানা বেগম বাসায় এসে শিশুটিকে ঘরের মেঝেতে মুমুর্ষূ অবস্থায় পায়। পরে তাৎক্ষণিকভাবে মা তাকে প্রতিবেশীদের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানান। এদিকে, এ ঘটনায় পরপরই রাত ১২টার দিকে বাবা লোকমান হোসেনকে একমাত্র আসামী করে ভৈরব থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে ভৈরব থানা পুলিশ শিশুটির উন্নত চিকিৎসা ও ধর্ষণে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় এলাকায় মানুষের মাঝে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ভৈরব থানার ওসি (তদন্ত) আবু তাহের জানান, প্রাথমিক চিকিৎসায় শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যাওয়ায় শিশুটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর মা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছে। আসামিকে গ্রেফতারে সম্ভাব্য সব জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ। অবশেষে আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
মন্তব্যসমূহ