মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় আলোচিত মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়ার আজ প্রথম জন্মবার্ষিকী পালন করেছে পরিবাটি।
গত বছর ২৩ জুলাই দুপুরে শহরের দোয়ারপাড়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুগ্রুপের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সুরাইয়ার ৮ মাসের গর্ভবতী মা নাজমা পারভীন।
এতে গর্ভের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয় সুরাইয়া। পরে ওইদিন রাতেই গর্ভাবস্থায় গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়াকে অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ করেন মাগুরার চিকিৎসকরা। গুলিবিদ্ধ একটি চোখে কিছুটা সমস্যা থাকলেও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে উন্নত চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠে সুরাইয়া। ওই ঘটনায় মমিন ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি বোমার আঘাতে মারা যান।
প্রথম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় মাগুরা শহরের দোয়ারপাড়ে তার বাড়িতে পুলিশ প্রশাসন ও চিকিৎসক এবং এলাকাবাসী সুরাইয়াকে দেখতে যান।
সন্ধ্যায় মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, চিকিৎসক শফিউর রহমানসহ সুধিজনেরা ফুল ও উপহার সামগ্রী নিয়ে তার বাড়িতে যান। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে ওই পরিবারটিকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, সুরাইয়ার চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে ঢাকায় পাঠানো ব্যবস্থাসহ অন্যান্য আয়োজন মাগুরার পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ করেছেন। এ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন আছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই পরিবারটিকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
গুলিবিদ্ধ সুরাইয়ার মা নাজমা পারভীন বলেন, মাগুরা ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা সুরাইয়া ও আমার চিকিৎসার জন্য অনেক সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু আর্থিক সংকট থাকায় সুরাইয়ার চিকিৎসার জন্য আমরা নিয়মিত ঢাকায় যেতে পারছি না। স্বামী বাচ্চু ভূঁইয়ার সামান্য চায়ের দোকান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো খুবই কষ্ট হয়। সুরাইয়া ঢাকা মেডিক্যালে থাকতে সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ লোকজন তার ভরনপোষণের ভার সরকার নেবে বলে জানালেও বর্তমানে কেউই তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে না বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর ২৩ জুলাই আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে নাজমা বেগম নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ পেটে গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় মোমিন ভূঁইয়া নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
এ ঘটনায় মোমিন ভূঁইয়ার ছেলে রুবেল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমন সেনকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন।
মন্তব্যসমূহ