র্সব শেষ শোলাকিয়ায় দুই পুলিশসহ নিহত-৪

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের কাছে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুই পুলিশসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। সকাল ১০ টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের প্রায় সোয়া ঘণ্টা আগে পুলিশের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।পরে গুলিবিদ্ধ একজনসহ  চারজনকে আটক করে পুলিশ।
এ সময় আহত হয়েছে আরো ১২ জন।  নিহতরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল জহিরুল ও আনসারুল এবং এক হামলাকারী। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
হামলায় আহতরা হচ্ছেন- এসআই নয়ন মিয়া ও কনস্টেবল প্রশান্ত, জুয়েল, রফিকুল, তুষার ও মশিউর। পথচারী তিনজন হচ্ছেন- আব্দুর রহিম, হৃদয় ও মোতাহার।
এদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক এক জঙ্গির নাম আবু মুক্কাদিল বলে জানা গেছে। তার বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকায়। সে মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির ছাত্র বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি এ জঙ্গি জানিয়েছে, হামলায় তারা পাঁচজন অংশ নিয়েছিল। তবে তারা কেউ কাউকে চেনে না বলে জানায়।

শোলাকিয়ায় ‘হামলায় অংশ নেয় ৮-১০ জন

জানা যায়,কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মানুষের ঢল নামে। এই জনস্রোতের মধ্যেই দুর্বৃত্তরা পুলিশের ওপর বোমার বিস্ফোরণ ও গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা জবাব দেয়। এতে দুই কনস্টেবল, এক নারী ও অপর এক হামলাকারী নিহত হয়েছেন।
পরে খবর পেয়ে দুপুরের দিকে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থাগুলো মিলে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। এসময় শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন আবদুল হান্নানের বাসা থেকে এক সন্দেহভাজন হামলাকারীসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া আরেক সন্দেহভাজনকে শোলাকিয়া মাঠের পাশ থেকেই আটক করা হয়েছে।পরে পুলিশের হাতে আটক আহত এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, তাদের আটজন সদস্য এই সন্ত্রাসী হামলায় অংশ নেয়।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি নিজের বাড়ি দিনাজপুর বলে জানান।তিনি বলেছেন, হামলা করার জন্য তারা ২৭ রোজার দিন কিশোরগঞ্জে আসেন।
কিশোরগঞ্জ পুলিশের একটি সূত্র এ সব তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, ওই হামলাকারীকে প্রথমে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে কড়া নিরাপত্তায় ময়মনসিংহে পাঠানো হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের জনস্রোতের মধ্যেই হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। প্রথমে তারা এটিকে নামাজের রেওয়াজ অনুযায়ী মাঠে শটগানের গুলি ফোটানো ভেবেছিলেন।
কিন্তু এরপর আরও শব্দ এবং পুলিশের বাঁশি, গাড়ির সাইরেন, আহতদের নিয়ে ছোটাছুটিতে সবাই হতভম্ব হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে তারা জেনে যান সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তারা ছোটাছুটি করতে থাকেন।
এদিকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলাস্থলের কাছে নীল রঙের ঢোলা পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরা একজন অল্পবয়সী ছেলের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ বলছে, নিহত অজ্ঞাত এই যুবক সন্দেহভাজন হামলাকারী। গোলাগুলির মধ্যে পড়ে সে নিহত হয়। তার পোশাকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় চাপাতি জাতীয় অস্ত্র রাখার চেম্বার ছিল।

যেভাবে প্রাণ গেল গৃহবধূর


ঝর্ণা রানী ভৌমিক

কিশোরগঞ্জে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় ঘরের মধ্যে থাকা ঝর্ণা রানী ভৌমিক নামে এক গৃহবধূ গুলিতে নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া এ ঘটনায় দুই পুলিশ কনস্টেবল ও এক হামলাকারী নিহত হন। এ সময় ছয় পুলিশসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান থেকে প্রায় এক ‍কিলোমিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সোয়া ৯টায় শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদের হেলিকপ্টার আজিমুদ্দীন স্কুল মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই সন্ত্রাসীরা ককটেল হামলা চালায়। পুলিশ ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় একটি গুলি গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিকের (৪০) ঘরের বেড়া ভেদ করে তার কপালে লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার স্বামীর নাম গৌরাঙ্গ চন্দ্র ভৌমিক। ঝর্ণা রানী রান্নাঘরে খাবার তৈরি করছিলেন। এ সময় ছেলে লুঙ্গি চাইলে তিনি ঘরে যান। তখন তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। তার স্বামীর নাম গৌরাঙ্গ ভৌমিক।

মন্তব্যসমূহ