সিরাজগঞ্জের বিমান বাহিনীর সদস্য রাশেদুল প্রেম প্রত্যাক্ষান কের ফেসে গেছে

সিরাজগঞ্জ: অনার্স পড়ুয়া আছিয়াকে বিয়ের কথা বলে বাড়িতে ডেকে এনে উধাও হয়েছেন বিমান বাহিনীতে কর্মরত প্রেমিক রাশেদুল ইসলাম। অনলাইনে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি বিমান বাহিনীর কিছু কর্মকর্তার নজরে পড়েছে। রাশেদুলের কর্মস্থলে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। রাশেদুলও ব্যাপারটি নিয়ে লজ্জিত হোন।
অথচ ঘটনার পর গ্রামের মুরুব্বিরা রাশেদুলকে শতাধিকবার ফোন করেও কোনো সাড়া পাননি। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এখন চাকরি বাঁচাতে নরম হয়েছে তিনি।
রাশেদুলের গ্রামের এক মুরুব্বির বলেন, আজ শনিবার আমি ফোন করলে রাশেদুল রিসিভ করে। রাশেদুল আছিয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
মুরুব্বি আরো জানান, আমি অাগে অনেকবার ফোন করেছি কিন্তু রাশেদুল ধরেনি। আজ সে ফোন ধরেই বিনয়ের সাথে কথা বলেছে। সে অারো বলেন আমাকে নিয়ে অনলাইনে নিউজ হয়েছে। বিষয়টি আমার অফিসের অনেকেই জেনে গেছে। এভাবে জেনে গেলে আমার চাকরি নিয়ে সমস্যা হবে।
এরপর রাশেদুল মুরুব্বিকে বলেন, আমি অফিস থেকে বের হয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলবো।
ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় রাশেদুলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী আছিয়ার পরিবার।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের মুরুব্বিরা সালিশ করে একটি সালিশনামা দিয়েছে আছিয়ার পরিবারকে। তাতে সর্বসম্মতিক্রমে রাশেদুলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এবং সুপারিশ করা হয়েছে আছিয়ার পরিবার চাইলে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
রাশেদুল ও আছিয়া সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সায়দাবাদ ইউনিয়নের কড্ডার মোড় এলাকার বাসিন্দা। রাশেদুল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঢাকা কুর্মিটোলা এল. আই. সি ৪০ এ কর্মরত। সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী আছিয়া খাতুনেরে সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমিকের ছদ্মবেশে রাশেদুল গভীরভাবে মেলামেশা করতো বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
রাশেদুল ইসলাম প্রতি বছরের নিয়মিত এক মাসের ছুটিতে বাড়ি যান। ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১০ জুলাই কড্ডার মোড় নিজবাড়িতে আব্দুল আজিজের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আছিয়া খাতুনকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ডেকে আনেন। দু’জনকে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করতে দেখেন স্থানীয়রা। তখন তাদের প্রেমকাহিনিও প্রকাশ পায়। বিষয়টি নিয়ে মাতব্বররা উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু রাশেদুলের পরিবার ছেলের প্রেমকাহিনি অস্বীকার করলে বেঁকে বসে আছিয়া। বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেন গ্রামের মাতব্বররা।
আছিয়া বলেন, আমার কাছে বেশ কিছু প্রমাণ আছে। ভিডিও কলসহ বিভিন্ন সময়ে মোবাইলে কথা বলার রেকর্ডিং ও ছবি আছে।
এদিকে, আছিয়ার চাচা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি সম্পর্কে সবস্তরের মানুষ এখন ভালভাবে জানে যে রাশেদুল ইসলাম প্রেমের প্রতারণায় ধরা পড়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে অবস্থান করছে। সরকারি চাকরি করে এ ধরনের এমন অসামাজিক ঘটনা নজিরবিহীন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য রাশেদুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ হয়ে কোনো একটি মহল আমাদের ৫ লাখ টাকা দেয়ার কথা মোবাইল ফোনে জানান। আমি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে দেই। এই বিষয়টি আমি প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন মহলের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।’ এ বিষয়টি নিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

মন্তব্যসমূহ