আমতলীতে কোচিং না করায় পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক!



আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধ: বাধ্যতামূলক কোচিং ক্লাস না করায় বরগুনার আমতলী চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ জাহান কবির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা ঘটেছে শনিবার সকালে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ জাহান করিব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামুলক কোচিং ক্লাস করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডেকে বাধ্যতামূলক কোচিং ক্লাসে আসার জন্য নির্দেশ দেয়। এবং কোচিং করতে না আসছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে শাসিয়ে দেয়। শনিবার সকালে ছিল দশম শ্রেনীর ভুগোল পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাবিহা, লুনা, নাসরিন, জাহিদ, জাকারিয়া, তানজিলা, মাসুম বিল্লাহ ও মেহেদী হাসান এবং অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাবিনা, শাকিল, সায়েম, সাব্বির, বনি, মহিমা, শারমিন, মেহেরুন্নেছা ও সজীবসহ ৩০/৩৫ জন শিক্ষাথীদের পরীক্ষা না নিয়ে পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছে। তাদের অপরাধ তারা প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মতে বৃহস্পতিবার রাতে কোচিং ক্লাসে আসেনি।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলেও প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয় কোচিং ক্লাসে না আসলে বিদ্যালয়ে আসার প্রয়োজন নেই। শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়ে বাড়ী চলে যায়। এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের দু’শিক্ষার্থী দশম শ্রেনীর সাবিহা ও অষ্টম শ্রেনীর সাবিনা আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম দেলওয়ার হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী সাবিনা জানান গত বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক রাতে বাধ্যতামূলক কোচিং ক্লাসে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ওইদিন রাতে যারা কোচিং ক্লাসে আসি নাই তাদের সকলকে তিনি শনিবার পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী সাবিনা জানান কোচিং ক্লাস যারা না করে সে সকল শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেলেও তাদের কম নম্বর দিয়ে যারা কোচিং করে তাদের বেশী নম্বর দিয়ে দেয়। সে আরো জানান পরীক্ষার দিন রাতে যারা কোচিং করে তাদের প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার প্রশ্ন দিয়ে দেয়। সে আরো জানায় প্রধান শিক্ষক আমাকে ঘাড় ধরে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিয়েছে। আমার ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যাথা।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক স্বপন আকন ও মকবুল মাতুব্বর জানান প্রধান শিক্ষক শাহ জাহান রাতে কোচিং ক্লাসে আসার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু আমার মেয়ে কোচিং না করার শনিবার পরীক্ষা না নিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান কবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি কাউকে কোচিং ক্লাস করাতে বাধ্য করিনি এবং পরীক্ষার হল থেকে নামিয়ে দেয়নি। কেন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেনি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়টি আমার জানা নেই।
আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম দেলওয়ার হোসেন জানান অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ