মুন্সীগঞ্জের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে ! একই সাথে ধর্ষককে প্রকাশ্যে জুতাপেটা করে ছেড়ে দিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীনগর উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তন্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সালিশ বৈঠকটি হয়। ধর্ষক নয়ন ঢালীকে (৪৫) তারা ছেড়ে দিয়েছেন।
গ্রামটির নুরু ঢালীর ছেলে নয়ন ঢালী তার দুই স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় প্রতিবেশী দরিদ্র এক কিশোরীকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। রুসদী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে নয়ন ঢালী পালিয়ে যায়। এঘটনায় শুক্রবার বিকালে ধর্ষকের বাড়িতেই সালিশ বসে। সালিশ মিমাংসায় স্থানীয় ইউপি সদস্য লাভলু, মিজানুর রহমান রন্টু, জালাল মাদবর, মনির ঢালীর নেতৃত্বে সালিসদাররা ঘটনার সত্যতা পেয়ে নয়ন ঢালীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং প্রকাশ্যে ১০ টি জুতাপেটা করার রায় দেয়। নয়ন ঢালীর বড় ভাই জুতাপেটার রায় বাস্তবায়ন করলেও ধর্ষিত ওই ছাত্রীর বাবা জানান, তিনি এখনো জরিমানার টাকা বুঝে পাননি। ওই ছাত্রীর বাবা আরো জানান, এঘটনায় তার পরিবারের লোকজন মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছে। সামাজিক ও লোক লজ্জার ভয়ে ওই ছাত্রী এখন স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অপর একটি সূত্র জানায়, ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে সালিসদাররা তরিঘরি করে তা ধামা-চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং ওই ছাত্রীর পরিবারকে থানা-পুলিশ করতে নিষেধ করেছে। এনিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইউপি সদস্য লাভলু মেম্বার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। সহকারী পুলিশ সুপার মো. সামসুজ্জামান জানান, ধর্ষণের বিচার করার এখতিয়ার চেয়ারম্যান বা সমজপতিদের নেই। এ ধরণের কোন বিচার বা সালিশ করা হলে সালিশকারীদের বিরুদ্ধেও তদন্তপূর্বক মামলা করা হবে। জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল জানান, যারা এই বিচার করে অপরাধীকে ছেড়ে দিয়েছে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
মন্তব্যসমূহ